সাম্প্রতিক সময় ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাংক ঋণে সুদের হারও বেড়ে গেছে। আর সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চলতি বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ঠিক করতে এবং ব্যাংকিং খাতে অর্থ সংকট দূর করতে গতকাল রাজধানীর গুলশানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মালিক ও এমডিদের দুটি সংগঠন। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বেসরকারি ব্যাংকে ৫০ ভাগ আমানত রাখার দাবিও মেনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। আরো জানা গেছে, বৈঠকে ব্যাংকগুলোর এমডিরা কথা দিয়েছেন যে, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান, ব্যাংকের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস্ (বিএবি) সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচএম ইকবাল, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখারসহ অধিকাংশ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডি উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে ব্যাংকিং খাতে সংকট কাটাতে আবার বৈঠক হবে রবিবার। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও এমডিরা উপস্থিত থাকবেন।
গতকাল রাতের বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মূলত ৩টি প্রস্তাব নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেছি। সরকারি সংস্থাগুলোর আমানতের ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা। যেটিতে অর্থমন্ত্রী রাজী হয়েছেন। আগামীকাল থেকেই এটি কার্যকর হবে। অন্য দুটি প্রস্তাব ছিল— সিআরআর সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমানো এবং সুদহার কমানো। তিনি বলেন, সুদহার আগেও সিঙ্গেল ডিজিটে ছিল। হঠাত্ করে ঋণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় তহবিল সংকট তৈরি হয়। যার ফলে সুদহার বেড়ে গেছে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তা সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে বলে এমডিরা কথা দিয়েছেন।