বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোটা সংস্কারের দাবিতে যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেছেন, আন্দোলনে যে কোটার বিষয়টি মূল প্রতিপাদ্য সে সম্পর্কে এদেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষিত যুবসমাজের জীবন-জীবিকার প্রশ্নটি জড়িত। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে বিনা উসকানিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা বর্বরোচিত আক্রমণ চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোটা পদ্ধতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কার করা হবে। কোটার নামে এই অবিচারের অবসান ঘটাতে বিএনপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আজ সোমবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, শিক্ষা সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকুরি প্রার্থীরা বেশ কিছুদিন যাবৎ আন্দোলন করছে। যে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে নিজেদের বঞ্চিত মনে করলে তা থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সোচ্চার হবেন এটাই গণতান্ত্রিক অধিকার’। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গতকাল প্রতিবাদে বিক্ষোভে মুখর হয়ে ওঠে। হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে দমাতে রোববার রাতে পুলিশ সহিংস হয়ে ওঠে এবং তাদের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে’।বিষয়টি নিয়ে বিএনপি উৎকন্ঠিত।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের নিয়ম-পদ্ধতির প্রতি এই সরকারের কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই, যা গত প্রায় এক দশকে বর্তমান সরকার বারবার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমান করেছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমান শাসকদের দেশ পরিচালনায় অন্যায়-অবিচারের শিকার হয়েছে দেশের জনগণ, বিশেষ করে এদেশের মেধাবী ও শিক্ষিত তরুণ সমাজ। এই অবিচারের অবসান ঘটাতে বিএনপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সমবেত মানুষের আওয়াজ শুনলেই শিহরিত হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জনগণের চাহিদা ও দাবিকে তারা সবসময় পাশ কাটিয়ে কেবলমাত্র আওয়ামী চেতনার মানুষদের সংকীর্ণ স্বার্থে কাজ করে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এদেশকে সত্যিকার অর্থে গড়ে তুলতে হলে মেধার কোনো বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে স্থির থেকেও আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে যৌক্তিকভাবে ভিশন ২০৩০-এ বলেছি যে, মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোটার যথাযথ সংস্কার করা হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠি ব্যাতিরেকে বাকি কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হবে। কেবলমাত্র যৌক্তিক কিছু কোটা রাখা হবে। সরকার এ বিষয়টি দুই বছর আগে বিবেচনায় নিলে আজ এই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতো না’।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, চাকরি প্রার্থী ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবী আদায়ের আন্দোলনে বিনা উস্কানিতে পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।