• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

তবুও কমছে না ব্যাংক ঋণের সুদের হার

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৮

সরকার উদ্যোগ নেয়ার পরও কমছে না ব্যাংক ঋণের সুদের হার। বরং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণের নতুন সুদ হার কার্যকর করছে। সেক্ষেত্রে দুই থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ হার বাড়িয়ে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সুদের হার কমানোর কোনো নির্দেশনা এখনো বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আসেনি।
ব্যবসায়ী—উদ্যোক্তারা বলেছেন, গত চার মাসে চার বার চিঠি দিয়ে চার দফা সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। জানুয়ারি থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত কেবলি বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে এখন পনের শতাংশ পর্যন্ত চলে গেছে। অধিকাংশ ব্যাংকই তা কার্যকর করে ফেলেছে। ব্যাংক—গ্রাহক সম্পর্কের তোয়াক্কা না করে বরং ব্যাংকগুলো এখন সুযোগ পেয়ে ইচ্ছেমত সুদ হার আরোপ করছে। অথচ সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে রাখতে সরকার ত্বরিত্ পদক্ষেপ নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে রাখতে হবে। সেই আলোকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী, গভর্নরসহ অন্যান্য নীতিনির্ধারকদের বৈঠকও হয়েছে। বৈঠকে সবাই একমত পোষণ করলেও ব্যাংকগুলো এখন তা মানছে না। বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দোহাই দিয়ে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে গ্রাহককে এক মাসের নোটিশ দিয়ে ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ দিতে। এই সময়ের মধ্যে গ্রাহক উত্তর না দিলে সুদের হার বাড়িয়ে দিতে হবে। বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
 দেশের বিদ্যমান জ্বালানি সংকটের মুখে উত্পাদন ঠিক রাখতে এবং নির্বাচনী বছরে সুদের হার না বাড়ানোর তাগিদ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির ঘোষণা এবং ঋণ আমানতের অনুপাত (এডি রেশিও) পরিবর্তন করার কারণে সুদের হার বাড়িয়ে দেয় ব্যাংকগুলো। পরবর্তীতে তিনদফা শিথিল করলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই। যদিও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের দাবি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবাহ বাড়াতে সরকারি তহবিলের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেয়া হয়। সুদের হার কমাতে এমন সুযোগ দেয়া হলেও বাস্তবচিত্র উল্টো। সব ব্যাংকই সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, বেশি সমস্যায় পড়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি ভোক্তাঋণ খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ঢালাও এই বৃদ্ধির ফলে ছোট অংকের ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, বড় অংকের ঋণগ্রহিতারা এমনিতেই নানান সুবিধা পেয়ে থাকে। ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধের সুযোগও তারা পান। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তা পান না। সুদের হার বৃদ্ধির ফলে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উদ্যোক্তাদের মতে, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সুদের হার দ্রুতই সিঙ্গেল ডিজিটে ফিরিয়ে আনা জরুরি। নইলে বাড়বে খেলাপি ঋণ, নষ্ট হবে কর্মসংস্থানের সুযোগও। তদুপরি, ব্যাংকগুলোতে আগ্রাসী আমানত সংগ্রহের যে পরিস্থিতি ছিল তা এখন আর নেই। নগদ জমা সংরক্ষণসহ (সিআরআর) অন্যান্য গৃহীত পদক্ষেপের কারণে তারল্য সংকটের অবসান হয়েছে। ফলে, সুদের হার বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম করে সুদের হার বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ