নিরামিষভোজীদের কাছে মাংস হিসেবে পরিচিত মাশরুম। চীন, কোরিয়া, ইউরোপ, জাপানিসহ পৃথিবীর অনেক দেশে মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় মাশরুম। আজকাল পশ্চিমা দেশগুলোর পিত্জাসহ অন্যান্য ফাস্টফুডেও মাশরুমের ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ।
মানুষের খাদ্য তালিকায় মাশরুমের এই ব্যাপক জনপ্রিয়তার মূল কারণ এর বিস্ময়কর পুষ্টিগুণ। কাঁচা অথবা রান্না করা মাশরুমে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। কাঁচা অবস্থায় এতে ভিটামিন বি খাদ্যপ্রাণ থাকে যাতে রিবোফ্লোবিন, নায়াসিন এবং প্যান্টোথেনিক এসিড থাকে। এছাড়া প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যেমন সেলেনিয়াম, কপার এবং পটাসিয়াম থাকে। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর চর্বি এবং শর্করার পরিমাণও অনেক কম। এসব কারণে অনেক আগে থেকে মানুষ মাশরুম খেয়ে থাকে। তবে মাশরুমের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ার পেছনে আরো একটি বড় কারণ মাশরুমের ওষুধি গুণ।
মাশরুমের ওষুধিগুণ সম্পর্কে গবেষকরা বলছেন, শুধু স্বাদের জন্য নয়, ওষুধি গুণেও ভরপুর মাশরুম। এতে ক্ষতিকর চর্বি, কোলেস্টেরল, সুগার এবং সোডিয়াম নেই। প্রোটিন, বি-ভিটামিন, ফাইবার, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন চিনি রয়েছে মাশরুমে। আগে চীন, কোরিয়া এবং জাপানের মানুষ মাশরুম খেলেও পশ্চিমাদের কাছে মাশরুমের পুষ্টিগুণ নিয়ে সন্দেহ ছিল। তাদের সেই ধারণা ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। ইউরোপ এবং আমেরিকার মানুষের কাছেও এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মানুষ।
পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আগে মাশরুমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা ছিল এখন দেখা যাচ্ছে তার থেকেও বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে মাশরুমে। মানুষের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করে মাশরুম। বুড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি, গ্লুটাথিয়েনিন এবং এরগোথিয়েনিন রয়েছে মাশরুমে।
মানুষের বুড়িয়ে যাওয়ার পর ক্যান্সার, হূদরোগ এবং স্মৃতিভ্রমের মতো রোগের জন্য দায়ী অক্সিডায়াটিভ স্ট্রেসকেই প্রধান কারণ মনে করা হয়। অক্সিডায়াটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে মাশরুম।
গবেষকরা এখন দেখার চেষ্টা করছেন, স্মৃতিশক্তি হারানোর রোগ প্রতিরোধে মাশরুম আসলে কতটা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।-সিএনএন