আর মাত্র কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। কিন্তু তার আগেই বাড়তে শুরু করেছে কোন কোন নিত্যপণ্যের দাম। গত এক মাস ধরেই পেঁয়াজ, রসুনের দাম বাড়তি। বেড়েছে চিনির দামও। এবার এ তালিকায় যোগ হয়েছে সবজি। তবে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগীর।
শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার ও শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে নিত্যপণ্যের দামের এ তথ্য পাওয়া যায়। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে দেশি ও আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ছিল যথাক্রমে ৩৮ থেকে ৪৫ টাকা ও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। গত এক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম বাড়তি। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র হিসেবে গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
কাওরানবাজারের পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ী লাভলু জানান, গত কিছুদিন ধরে দেশে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়। এছাড়া রমজানে জন্য মানুষ আগে থেকে একসঙ্গে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কেনার একটা প্রবণতা থাকে। এর ফলে একটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। এ কারণেও দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। তিনি বলেন, যার যতটুকু দরকার তিনি যদি সেই পরিমাণ পেঁয়াজ কিনেন তাহলে দাম কমে আসবে।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রতি বছর রমজানে পেঁয়াজের চাহিদা ৪ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের মজুত রয়েছে ১৭ দশমিক ৯১ লাখ টন। গত মার্চ পর্যন্ত এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হিসাব ধরে মজুতের এ হিসেব দেয়া হয়েছে। এ হিসেবে দেশে চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। তাই দাম বাড়ার কোন কারণ নেই।
এদিকে রাজধানীর বাজারে সবজির দামও বাড়তি। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি আলু ২০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, করল্লা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহ থেকে সবজিভেদে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি শুকনা মরিচে ১০ টাকা বেড়ে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা ও রসুনে ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়। চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়।
স্থিতিশীল রয়েছে মাছ, গরু ও খাসীর মাংসের দাম। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি রুই ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
এছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫’শ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগীর। প্রতি কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।