• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

রোজার শারীরিক ও মানসিক উপকার কি কি

আপডেটঃ : রবিবার, ২০ মে, ২০১৮

রোজা দ্বারা সবচেয়ে বড় মানসিক উপকার হলো ক্ষুধা ও রিপুর উপর নিয়ন্ত্রণ। রোজা রাখার মধ্য দিয়ে স্থান ভেদে একজন ব্যক্তি প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৮ ঘণ্টা সকল প্রকার পানাহার ও যৌন আচার থেকে বিরত থাকেন। ফলে তার মধ্যে ক্ষুধা ও রিপুকে নিয়ন্ত্রিত রাখার যোগ্যতা গড়ে উঠে। এছাড়া, সমাজের গরীব মানুষ যারা খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করে, ধনীরা রোজার মাধ্যমে তাদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারেন এবং তাদের প্রতি অধিক সহানুভূতিশীল হয়ে উঠেন। অনেক রোজাদারের জবানবিদ থেকে জানা যায়, তারা রোজা রেখে এক ধরণের আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি অনুভব করেন।
রোজার শারীরিক উপকারের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো- শরীরের মেদ কমা, ওজন হ্রাস এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠে ওঠা। এর প্রধান কারণ হলো, ইসলামের রোজা রাখার পদ্ধতি। রোজার নিয়ম যদি এমন  হতো যে চব্বিশ ঘণ্টাই পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে, সেক্ষেত্রে শরীর অতিরিক্ত পানি হারাতো এবং রক্তে গ্লুকোজ মাত্রাতিরিক্ত কমে যেতো। ফলে মস্তিষ্ক নিস্তেজ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিত। এছাড়াও শরীরের অন্যান্য অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকত। কিন্তু ইফতার থেকে সাহরি অবধি পানাহার করার ফলে শরীর কখনও উক্ত অবস্থা পর্যন্ত অগ্রসর হয় না এবং আশঙ্কাজনক হারে দুর্বল হয় না।
এছাড়া যেহেতু ইফতার  ও সাহরির জন্য কোন নির্দিষ্ট ধরণের খাদ্য বেঁধে দেয়া হয়নি সেহেতু মুসলিমদের শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে শরীরের ওজন হ্রাসের জন্য প্রধান শর্ত হলো পরিমিত খাওয়া। আমেরিকার একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজার মাধ্যমে যে মানসিক পরিবর্তন আসে তাতে মস্তিষ্ক থেকে এক ধরণের নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর নিঃসৃত হয় যা অধিক নিউরন তৈরিকে প্রভাবিত করে।
রমযান মাসে ধূমপায়ীদের জন্য ধূমপান ত্যাগ করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। একজন রোজাদার যেহেতু সারাদিন ধূমপানের সুযোগ পাচ্ছে না, সেহেতু যে যদি রাতের বেলায়ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে পারে তাহলে একমাসের এই সংযমের মধ্য দিয়ে সে ধূমপান ত্যাগ করতেও সক্ষম হবে। এছাড়া অন্য কোন বদভ্যাস থাকলেও তা থেকে মুক্ত হওয়ার সময় হলো রোজা। যেহেতু পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে রোজা রাখেন। সেহেতু বদভ্যাস ত্যাগ করার প্রচেষ্টায় উত্সাহ তৈরি হয়।
যথাযথ ইফতার ও সাহরীর মাধ্যমে রমযান মাসে রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কোন কোন গবেষণায় দেখা গেছে যে, রমযান শেষে রক্তে উপকারী কোলেস্টেরল এইচডিএল-এর পরিমাণ বেড়েছে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এলডিএর-এর পরিমাণ মাত্রা কমেছে। তবে উক্ত উপকারের প্রাপ্তি নির্ভর করছে রমযানের খাদ্যাভ্যাসের উপর। ইফতার ও সাহরীতে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করতে পারলে এবং অধিক পানাহার থেকে বিরত থাকলে রক্তে চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকলে হৃদপিন্ড ও রক্তনালীর উপকার সাধিত হয়। এছাড়া রোজার মধ্যে দিয়ে যেহেতু দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিবারণ হচ্ছে না বরং ধীরে ধীরে ক্ষুধার প্রশিক্ষণ হচ্ছে, ফলে রমযান মাস শেষে ক্ষুধার মাত্রাও কমে আসবে। রোজার পানাহার থেকে বিরত থাকার কারণে খাদ্যনালীর পরিপাক প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয়ে উঠবে। ফলে খাদ্যদ্রব্য থেকে বেশি পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ