চলতি বছরের শুরু থেকেই বাড়ছে প্রবাসী আয়। গত মাসেও সে ধারা অব্যাহত ছিল। গত মে মাসে দেশের ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ কোটি ৫২ লাখ ডলার বা প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। গত বছর মে মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, মে মাসে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসের (জুলাই-মে) মোট আয়ও বেড়েছে। এসময় মোট এক হাজার ৩৫৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। গত বছর ১১ মাসে এক হাজার ১৫৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের দাম এবং দেশে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রেমিটেন্স আয়ও বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি হুন্ডি প্রতিরোধও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে পণ্য আমদানি বাড়ার কারণে বাজারে এখন ডলারের চাহিদা বেশি। সে কারণে ব্যাংকগুলো তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই রেমিট্যান্স আনতে বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এবং ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ার কারণে প্রবাসীরাও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এ ছাড়া হুন্ডি প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশকিছু উদ্যোগও কাজ করেছে।
তথ্য মতে, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আগের (২০১৫-১৬) অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম রেমিট্যান্স আসে। গত এপ্রিলে ১৩৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা এর আগের মাস মার্চের তুলনায় বেশি ছিল। একক মাস হিসাবে চলতি অর্থবছরের সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স আসে সেপ্টেম্বরে। ওই মাসে এসেছিল ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। আর সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে গতমাসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। যা এপ্রিল মাসে ছিল ৩২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ২২ লাখ ডলার এসেছে যা এপ্রিলে ছিল এক কোটি নয় লাখ ডলার। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে মে মাসে ১০৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে যা এপ্রিলে ছিল ৯৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।
বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ৩৪ লাখ ডলার এসেছে যা এপ্রিলে ছিল এক কোটি ৪১ লাখ ডলার। বরাবরের মতো সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আহরণকারী বেসরকারি হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের পরে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব অগ্রণী ব্যাংক। গত মে মাসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ২৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার এসেছে। যেখানে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৩২ ডলার। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৭ লাখ ডলার এসেছে।