আন্তর্জাতিক | তারিখঃ জুন ১৪, ২০১৮ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3977 বার

উপরোক্ত ছবিটি দেখে মনে হতে পারে যে তিনজন নারী ফুল রোপন করছেন ও নিড়াচ্ছেন। কিন্তু কট্টর রক্ষণশীল ও অস্থিতিশীল প্রদেশগুলোর জন্য এটা একটি বিরল ঘটনা। জালালাবাদের সরকারি বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে আফগান নারীরা ঘরের বাইরে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
মাথা ও মুখের সম্পূর্ণ অংশ ঢেকে শুধু চোখ খোলা রেখে নারীরা পূর্বাঞ্চলীয় এই নগরীর সরকারি বাগান পরিচর্যা করছেন। তাদের পরনে উজ্জ্বল কমলা রঙের ঢিলাঢালা কাজ করা পোশাক। তাদের পুরুষ সহকর্মীরাও একই রঙের পোশাক পড়েছেন।
জালালাবাদে প্রকাশ্যে আরো অল্প কিছু সংখ্যক নারী এ ধরনের পোশাক পড়েন। এটি দেশটির ঐতিহ্যবাহী আকাশী নীলের নতুন সংস্করণ। সপ্তাহে ছয় দিন এই নারী বাগান পরিচর্যাকারীরা গোলাপ ও ফলের গাছ পরিচর্যা করেন। তাদের সবাই হতদরিদ্র ও অনেকেই বিধবা। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনীর পরও এরা প্রতিমাসে মাত্র ১৩০ মার্কিন ডলার করে পায়।

ফাইল ছবি
দলপতি লাইলুমা শিরজাদ (২৬) বলেন, পুরুষরা মনে করে নারীরা শুধু ঘরের কাজই করতে পারে। এটা করে আমরাও সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছি সুযোগ পেলে নারীরা শুধু ঘরের কাজই নয়, বরং এর থেকেও অনেক বেশি কিছু করতে পারে। তার চোখ ছাড়া সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা।
নানগরহারে নারী কর্মীদের জন্য কাজ করা সহজ নয়। প্রদেশটি তোরা বোরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ৯/১১ হামলার পর আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন এখানেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন এটি ইসলামিক স্টেটের ঘাঁটি। সেখানে ইসলামিক স্টেট আর তালেবানদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে।
জাতিসংঘর সংস্থা ইউএন হাবিট্যাট নারীদের জন্য এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। এর জন্য তাদেরকে নারীদের কঠোর রক্ষণশীল পরিবারকে অনেক বুঝাতে হয়েছে।
জালালাবাদে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের প্রধান কর্মকর্তা মোহম্মদ নাদের সারগান্দ বলেন, অধিকাংশ নারীর জন্যই এটা বাড়ির বাইরে যাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা।
জালালাবাদে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের প্রধান কর্মকর্তা মোহম্মদ নাদের সারগান্দ বলেন, অধিকাংশ নারীর জন্যই এটা বাড়ির বাইরে যাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পশতু সংস্কৃতিতে জাতিগত গোষ্ঠীগুলো ইসলাম-বহির্ভূত বেশ কিছু বিধিনিষেধ নারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে বের হতে দেয় না বলে জানান তিনি।
নারী এবং যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত লোকসহ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে এবং আফগানিস্তানের প্রধান প্রধান নগরীতে পার্কগুলো দেখভাল ও পরিচর্যা করার জন্য ২০১৬ সালে এই কর্মসূচিটি শুরু হয়েছে। কাবুলসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে প্রায় ৮ হাজারের মতো মালিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ১ হাজার নারী। এদের মধ্যে ১শ’ জনের বয়স ১৮ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। এরা জালালাবাদে কাজ করছেন। বিশ্বব্যাংকের মতে, ২০১৭ সালে ১৯ শতাংশ আফগান নারী সরকারি চাকুরিতে কর্মরত রয়েছে। এএফপি-বাসস।
Leave a Reply