• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

চালের দাম বেড়েছে

আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৯ জুন, ২০১৮

অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। ঈদের আগে পাইকারী বাজারে চালের দাম বাড়লেও এখন খুচরাবাজারেও দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশী দাম বেড়েছে মোটা চালের। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবেও দাম বাড়ার এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ পুনর্বহালে আমদানিকারক ও মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছে দিয়েছে। এছাড়া গত ২৬ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, কোন অবস্থাতেই শুন্য মার্জিনে অর্থাৎ বাকিতে চাল আমদানির এলসি (ঋণপত্র) স্থাপন করা যাবে না। চাল আমদানি কঠোর করতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। চাল আমদানি বাড়াতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিনা মার্জিনে ঋণপত্র খোলার সুযোগ ছিল। এখন নগদ টাকা নিয়ে ঋণপত্র খুলতে হবে ব্যবসায়ীদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপণে বলেছে, ধান ও চাল ব্যবসায়ীদের ঘূর্ণায়মান (রিভলবিং) ঋণের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন পর অবশ্যই পুরো টাকা শোধ করতে হবে। আগে ৩০ দিনের মধ্যে ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ ছিল। ঋণপত্র খুলতে ব্যবসায়ীদের এখন ৪৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
প্রজ্ঞাপণে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আবহাওয়া ধান চাষের অনুকূলে থাকায় চলতি বছর ধানের উৎপাদন সন্তোষজনক হয়েছে। কৃষক ও স্থানীয় উৎপাদকদের ধান/চালের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ কৃষকদের ধান চাষে উৎসাহ দিতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এসব কারণে কোন অবস্থায় শুন্য মার্জিনে ঋণপত্র স্থাপন করা যাবে না।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ীদের কাছে এখন যে চাল মজুদ আছে, তা শূন্য শুল্কের সুযোগ নিয়ে আমদানি করা। এ ছাড়া আমদানি শুল্ক পুনর্বহালের পর এখন পর্যন্ত নতুন করে কোনো চাল আমদানিও হয়নি। শূন্য শুল্কে আমদানি করা যে পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে তা দিয়ে  আরো অন্তত ২/৩ মাস বাজারের চাহিদা মেটানো যাবে। তাই এখনই চালের দাম বাড়ার কারণ নেই।
শুক্রবার রাজধানীর খুচরাবাজারে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, মাঝারিমানের চাল পাইজাম/লতা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪২ টাকা, মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা ৪৭ থেকে ৫৪ টাকা ও সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
মোহাম্মদপুর কৃষিবাজারের তিতাস রাইচ এজেন্সির স্বত্বাধীকারী মো. আব্দুল মতিন শুক্রবার ইত্তেফাককে বলেন, আমদানি শুল্ক পূর্ণবহালেই চালের দাম বেড়েছে। আমদানিকৃত চালের দাম বাড়ায় দেশীয় মিল মালিকরাও চালের দাম বাড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজারে এখন চালের দাম বাড়ার কোন কারণ ছিল না। বাজারে এখন চালের সরবরাহ ভাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, কৃষকদের স্বার্থে সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক পুনর্বহাল করেছে। কিন্তু এর সুবিধা লুটে নিচ্ছে মিল মালিক, আমিদানিকারক ও মধ্যস্বত্বভোগীরা। কৃষকদের কাছে এখন কোনো ধান নেই। তারা কাটার আগেই মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
এদিকে চালের পাশাপাশি রাজধানীর বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দর। গত সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
দাম বেড়েছে ডিমের। হালিতে ২ টাকা বেড়ে ফার্মের লাল ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ২৬ থেকে ২৮ টাকায়। তবে ঈদের পর বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করল্লা ৪০ টাকা, কাঁকরোল, ঝিঙা ও চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ