পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) ২০ লাখ গাছ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক অঞ্চলকে পরিবেশবান্ধব এলাকা হিসেবে উন্নয়নের পাশাপাশি সেখানে কমপ্লায়েন্ট শিল্প ইউনিট গড়ে তোলা হবে।
এ বিষয়ে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষা সমানভাবে করতে চাই। এর জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে আগামী ৫ বছরে ২০ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য প্রতিবছর ৪ লাখ গাছ রোপণ করব।
তিনি জানান, শিল্প ইউনিটের বাইরে বিশেষত অর্থনৈতিক অঞ্চলের রাস্তা, বাঁধ কিংবা নির্ধারিত কোন জায়গায় এই ২০ লাখ গাছ রোপণ করা হবে। এর অংশ হিসেবে মিরসরাইয়ে ৫শ’ একর এবং সোনাদিয়ায় এক হাজার একর জমিতে বৃক্ষ যাদুঘর গড়ে তোলা হবে।
সরকারি এসইজেড বা অঞ্চলগুলোয় বেজা গাছ রোপণ করবে। অন্যদিকে বেসরকারি অঞ্চলগুলোতে এসইজেডের মালিকপক্ষ তাদের নিজস্ব পরিকল্পনায় গাছ লাগাবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি শিল্প গ্রুপ ‘টিকে’ গ্রুপ তার সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) আওতায় এসইজেডে বনায়নের কাজ শুরু করেছে।
বনজ, ফলজ এবং ভেষজ এই তিন ধরনের বৃক্ষই রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে। মূলত ঝাউ, সোনালু, পিংক সোনালু, জারুল, নারিকেল, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, কদম, বকুল, রক্ত কাঞ্চন, অর্জুন, মহুয়া, স্বর্ণ চাঁপা ও হৈমন্তী চারা রোপণ করা হবে।
পবন চৌধুরী জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পরিবেশবান্ধব করতে সবুজায়নের পাশাপাশি প্রত্যেক জোনে জলাধার থাকবে। মিরসরাইয়ে দুই হাজার একর জমিতে জলাধার রাখা হবে। যাতে শিল্পের কারণে কোনভাবে যেন পরিবেশ ধ্বংস না হয়।
তিনি বলেন, মিরসরাই এবং সোনাদিয়ায় কেবল শিল্প-কারখানা থাকবে না, সেখানে সবুজায়ন, জলাধার তৈরি এবং সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ভ্রমণ পিয়াসুরা যাতে প্রকৃতির টানে সেখানে ছুটে যায়।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও জানান, এসইজেডের রাস্তা, বাঁধ কিংবা নির্ধারিত জায়গা ছাড়াও প্রত্যেক শিল্প ইউনিটের মধ্যে (ইনডোর) গাছ রোপণ বা সুবজায়ন করা বাধ্যতামূলক। শিল্প-কারখানার অন্তত ৫ শতাংশ জমিতে গাছ রোপণ করতে হবে।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে ২৮টি এসইজেডের উন্নয়নের কাজ চলছে। ১৫ বছরের মধ্যে সরকার ১০০টি এসইজেড গড়ে তুলতে চাই। এখানে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ৪০ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স এবং ৬টি চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। বাসস।