সৌদি ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রমজানের শুরুতে ফোনে কথা বলেছেন এবং তারা একটি যুগান্তকারী দ্বিপাক্ষিক পুনর্মিলন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য শিগগিরই সাক্ষাতের অঙ্গীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই ফোনালাপ করেন। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানকে ফোন করেন এবং তারা উভয়ে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দুই মন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে দূতাবাস ও কনস্যুলেট পুনরায় খোলার পথ প্রশস্ত করার জন্য শিগগিরই একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্মত হয়েছেন।’
সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, সৌদি ও ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাত বছর পর মন্ত্রীদের এ প্রত্যাশিত বৈঠকটি হতে যাচ্ছে। চীনের চমকপ্রদ মধ্যস্থতায় গত ১০ মার্চ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ঘোষণার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সৌদি আরবে শিয়া আলেম নিমর আল-নিমরের ফাঁসির পর ২০১৬ সালে ইরানি বিক্ষোভকারীরা সৌদি কূটনৈতিক মিশনগুলোতে আক্রমণ করার পরে রিয়াদ সম্পর্ক ছিন্ন করে, যা দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটি ধারাবাহিক ও দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ তৈরি করে।
এই চুক্তিতে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান এবং প্রধানত সুন্নি মুসলিম সৌদি আরব দুই মাসের মধ্যে তাদের দূতাবাস ও মিশন পুনরায় চালু করবে এবং ২০ বছরেরও বেশি আগে স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রোববার একজন ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বাদশাহ সালমানের কাছ থেকে সৌদি আরব সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছেন, যদিও রিয়াদ এখনো এই সফর নিশ্চিত করেনি।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান একই দিনে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দুই দেশ তাদের শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যে একটি বৈঠক করতে সম্মত হয়েছে এবং বৈঠকের জন্য সম্ভাব্য তিনটি স্থানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সৌদি আরব, বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশ এবং ইরান তার পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে পশ্চিমা সরকারগুলোর সাথে কড়া মতবিরোধে জড়িয়ে রয়েছে। সম্পর্ক পুননির্মানের মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে এই অঞ্চলে বিরাজমান অশান্তি নিরসনের সম্ভাবনা রয়েছে।