নির্বাচনে হেরে গেলেন ফিনল্যান্ডের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট প্রধানমন্ত্রী। মাত্র ৩৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সান্না মারিন। কিন্তু দ্বিতীয়বার গদিতে ফেরা হলো না তার। ফলে ন্যাশনাল কোয়ালিশন পার্টি (এনসিপি) প্রধান পেটেরি অরপোকেই ফিনল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
কঠিন লড়াইয়ের পর এগিয়ে আছে সেন্টার রাইট ন্যাশনাল কোয়ালিশন। দলটি পেয়েছে ২০.৮ শতাংশ ভোট। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ১৯.৯ শতাংশ ভোট। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফিনস পার্টি পেয়েছে ২০.১ শতাংশ ভোট। কোনো দলই সেই অর্থে সরকার গঠনের জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতা-কলমে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করতে পারে ন্যাশনাল কোয়ালিশন।
রাজধানী হেলসিঙ্কির একটি রেস্তোরাঁয় সমর্থকদের সামনে নিজের বিজয় দাবি করা এনসিপি প্রধান পেটেরি অরপো বলেন, আমরা সবচেয়ে বড় ম্যান্ডেট পেয়েছি।
এদিকে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর হার স্বীকার করে নিয়ে সান্না মারিন বিজয়ী দল ন্যাশনাল কোয়ালিশন পার্টিকে অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে ফিন্স পার্টিকেও অভিনন্দন জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজ গণতন্ত্র কথা বলেছে, ফিনিশ জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে এবং নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন একটি দারুণ বিষয়।’
শাসক দলের প্রধানমন্ত্রী অবশ্য পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। তিনি হার মেনে নিচ্ছেন। বস্তুত তার হাত ধরেই ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিতে চলেছে। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর ফিনল্যান্ডের আইনসভা ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়।
৩০ সদস্যের ন্যাটোয় ফিনল্যান্ডের সঙ্গে সুইডেনও যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। বস্তুত ফিনল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সে কারণেই তারা এত মরিয়া হয়ে উঠেছে। সুইডেন এখনো সব দেশের থেকে সবুজ সংকেত না পেলেও সম্প্রতি তুরস্কের ভোট পেয়ে ফিনল্যান্ড এখন ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য তৈরি।
এর আগে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে রেকর্ড তৈরি করে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন সান্না মারিন। এ বছর দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য লড়ছিলেন তিনি। প্রচারে একাধিকবার ন্যাটোর প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার ন্যাটো প্রস্তাব ফিনল্যান্ডের মানুষের ওপর ততটা প্রভাব ফেলেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ভয়াবহ লেবার বা মজুরের অভাবই এমন ফলাফলের কারণ।