পাকিস্তান তুরস্ক অথবা মিয়ানমার হওয়ার মাঝপথে দাঁড়িয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিনি বলেছেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে পাকিস্তান তুরস্ক হবে নাকি মিয়ানমার।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
এতে বলা হয়েছে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে এক বিবৃতিতে ইমরান খান বলেছেন, আমাদের কাছে দু’টি পথ খোলা আছে, হয় তুরস্কের পদাঙ্ক অনুসরণ করা অথবা মিয়ানমারে পরিণত হওয়া।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের সাংবিধানিক ইতিহাসের একটি মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি, এটা এমন এক অবস্থা যেখান থেকে আমরা তুরস্কের মতো হতে পারি বা অন্যদিকে মিয়ানমারে পরিণত হতে পারি। সংবিধান, আইনের শাসন এবং গণতন্ত্রের পাশে পিটিআই যেমন দাঁড়িয়েছে, প্রত্যেককে তেমনই বেছে নিতে হবে যে তারা দাঁড়াবে কিনা; অথবা (সেটি না হলে) দুর্নীতিগ্রস্ত মাফিয়া, জঙ্গলের আইন এবং ফ্যাসিবাদের সাথে দাঁড়াতে হবে।’
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেছিলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে দেশ ভেঙে পড়বে এবং পাকিস্তান ব্যানানা রিপাবলিকে পরিণত হবে। তিনি বলেন, আইনের অধীনে নির্বাচন হবে তা বিবেচনায় রেখে তারা প্রাদেশিক আইনসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি সংকটে তলিয়ে যাচ্ছে এবং পিডিএম নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাচ্ছে। তারা ঋণের জন্য অপেক্ষা করছে যাতে তারা পিটিআইকে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দেওয়ার পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।
প্রবাসী পাকিস্তানিরা – বিশেষ করে যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন – বিদেশে ১০.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে জানিয়ে ইমরান বলেন, তারা দেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু আইনের শাসন ছাড়া তা সম্ভব নয়।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে আঘাত করা হলেও তিনি কখনও বিষণ্ণ বোধ করেননি। তিনি বলেন, তিনি চার মাস বাড়িতে কাটিয়েছেন এবং একটি ঘরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন।
পিটিআই প্রধান বলেন, ‘আমি ভুট্টো বা নওয়াজ শরিফের মতো কোনো সামরিক নার্সারিতে বড় হইনি। আমি আমার দল তৈরি করেছি এবং জনসাধারণের সাথে যোগাযোগ করেছি।’
বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, তিনি তার জীবনে অনেক ভুল করেছেন এবং এই দু’টি পরিবার সম্পর্কে তিনি ভুল হিসাব করেছেন। এমনকি পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়াতে (কেপি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থার অভাবও প্রকাশ করেছেন ইমরান।
তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার দলের কর্মীদের ওপর হামলার পেছনে থাকবে এমন কোনও ধারণাই তার ছিল না। নিজের দল পিটিআইয়ের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘(ক্ষমতাসীন) পিডিএম ক্ষতির মধ্যে রয়েছে, কারণ যখন নির্বাচন হবে তখনই তারা হেরে যাবে।’