২০২২ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর ইউক্রেনীয়দের সহায়তায় ঝাঁপিয়ে পড়ে পোল্যান্ড। সীমান্ত খুলে দেওয়া থেকে শুরু করে যত মানবিক সহায়তা আছে এর সবই করেছে দেশটি। আর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আজ বুধবার (৫ এপ্রিল) পোল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির।
তবে জেলেনস্কির এ সফর পণ্ড করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পোলিশ কৃষকরা। প্রচুর পরিমাণে ইউক্রেনের শস্য পোল্যান্ডে আসায় দেশটির কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের দাম কমে গেছে। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। আর এ বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ওপর ক্ষেপে আছেন তারা। যখনই তারা জানতে পেরেছেন জেলেনস্কি পোল্যান্ডে আসছেন তখনই তারা হুমকি দিয়েছেন, তার এ সফর পণ্ড করে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, পোলিশ কৃষকদের এমন হুমকি রাশিয়ানদের বার্তা দিবে— ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যে একতা ছিল, সেটিতে ফাটল ধরেছে।
পোলিশ সংবাদমাধ্যম ইন্টেরিয়াকে জামোক কৃষক সমিতির প্রধান মার্সিন সোবজুক বলেছেন, ‘ওয়ারসকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’ তিনি জানিয়েছেন তাদের সমিতি জেলেনস্কির সফর পণ্ড করে দিতে প্রস্তুত আছে। আর সফর পণ্ড করতে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তারা।
যুদ্ধ শুরুর আগে ইউক্রেনে যেসব শস্য উৎপাদিত হতো— সেগুলোর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে ঢুকতে পারত। তবে যুদ্ধ শুরুর পর নির্দিষ্ট সীমা এবং কর ওঠিয়ে দেয় ইউনিয়ন। এরপর কোনো বাঁধা ছাড়া টন টন শস্য ইউরোপের দেশগুলোতে যায়। অবশ্য ইউক্রেনের শস্যগুলো আফ্রিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে যেন নির্বিঘ্নে রপ্তানি করা যায় এ কারণে এমন উদ্যোগ নিয়েছিল ইইউ।
তবে বর্তমানে ইউক্রেনের শস্য ইইউভুক্ত দেশগুলোতেই রয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশটির আঞ্চলিক বাজারগুলোতে।
বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ার কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের দাম পড়ে গেছে। যা অনেককেই ক্ষুব্ধ করেছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউজ মোরাউইকি বলেছেন, তিনি ইউরোপিয়ান কমিশনের কাছে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের শস্যের ওপর যেন আবারও বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়। তবে পোলিশ কৃষকরা জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত এমন কিছু তারা দেখেননি।
পোল্যান্ডে মূলত পণ্য পরিবহনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ইউক্রেনের শস্যগুলো জমে যাচ্ছে। মূল সমস্যা হলো ইউক্রেনের মালবাহী ট্রেনে। বর্তমানে এই ট্রেনগুলো অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।