অনেকেই কলা খান না। আবার অনেকের নিত্যদিনের সঙ্গী কলা। অবশ্যই পাকা কলা খেয়ে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত পাকা কলা বেশির ভাগ মানুষ খেতে চান না।কলার চামড়া কালো রঙ এবং কলা অতিরিক্ত পেকে যাওয়ার কারণে অনেকেই ভাবেন পঁচা ধরেছে। ফলে ময়লার সঙ্গে কলাও ফেলে দেওয়া হয়।
আমেরিকার করনেল ইউনিভার্সিটি কলেজ অব হিউম্যান ইকোলজির গবেষকদের মতে, অতি পাকা কলা প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। আসলে কলা যখন বেশি পেকে যায় তার পুষ্টি গুণ পরিবর্তন হয়ে যায়। তার মানে এই নয় যে এর পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে। বরং এর পুষ্টি হয়ে যাবে দ্বিগুণ।
কলায় আছে, প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আঁশ, কপার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি সিক্স ও বায়োটিন আছে।
তাহলে পাকা কলার উপকারিতার জেনে নিন-
শক্তি বাড়ে :
শরীর চর্চা করার পর অতিরিক্ত পাকা কলা মাত্র দুই থেকে তিনটি খেলে দেহের শক্তি বাড়ায়। অতি পাকা কলায় আছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও সুগার থাকে। এগুলো শরীরে শক্তি বাড়ায়।
হতাশা দূর করে:
বেশি পাকা কলায় হতাশা দূর করে মনে সতেজ ভাব নিয়ে আসে। বেশি পরিমাণে ট্রিপটোফান থাকে, যা খাওয়ার পর সেরোটোনিনে পরিণত হয়। এই উপাদান নার্ভাস সিস্টেমকে ঠাণ্ডা রাখে।
বুক জ্বালা দূর করতে সাহায্য করে:
বাদামী বা কালোদাগ সহ বেশি পাকা কলা খেলে বুক জ্বালা কমে। এমনকি অ্যান্টাসিডের কাজ করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ:
কলায় পটাশিয়াম বেশি, সোডিয়াম কম থাকে বলে এটি খেলে কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক থাকে। কলায় থাকা আঁশ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। আর কলায় থাকা কপার ও আয়রন রক্ত ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়।
নিয়মিত কলা খেলে শরীরের ক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। আসলে কলা খাওয়া মানেই পটাশিয়ামের এন্ট্রি ঘটা শরীরে। আর দেহের অন্দরে পটাশিয়াম বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এক কথায় বলতে পারেন এই খনিজটির ছোঁয়া পেয়ে হার্ট পুনর্জীবন ফিরে পায়।
রক্তচাপ কমায়-
অতিরিক্ত পাকা কলা রক্তনালীতে থাকা ব্লক দূর করে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। বেশি পাকা কলায় সোডিয়াম কম ও পটাশিয়াম বেশি থাকে। তাই নিয়মিত অতি পাকা কলা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
দূর করে রক্ত স্বল্পতা-
অতি পাকা কলায় আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই এটি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর-
অতিরিক্ত পাকা কলা খেলে হজম ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
কোষের ক্ষতি রোধ-
অতি পাকা কলায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষ নষ্ট হওয়া রোধ করে। এতে রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে। তাছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে কলা।
ক্যানসার প্রতিরোধ-
ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে পাকা কলা। বেশি পাকা কলার উপর যে কালো দাগ পড়ে, তা টিউমার নেকরোসিস ফ্যাক্টর নামের উপাদান তৈরি করে, যা শরীরের ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষ ধবংস করে।