দুর্নীতি দমন কমিশন বিএনপি দমন কমিশনের পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশের বিরাজমান সীমাহীন দুর্নীতির মহাতান্ডব দুর্নীতি দমন কমিশনের চোখে পড়ছে না। বর্তমানে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা ও নেতা-কর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তারা(দুদক) এখন ফ্যাসিস্ট এই সরকার আন্দোলন দমাতে যে চক্রান্ত শুরু করেছে তার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শনিবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আশ্বর্যজনক হলেও সত্য যে, যেসব সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোনো দলিল বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নেই, তাকে সেসব সম্পত্তির গায়েবী মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।এমনকি তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কল্পনিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
চলমান আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতেই সরকারের ইংগিতে তারেক-জোবাইদার মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে নেতা-কর্মী ও জনগনের মনোবল বিনষ্ট করতেই সরকারের ইংগিতে মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে। যেসব অভিযোগে এই মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা অবান্তর, ভিত্তিহীন ও অমূলক। চার্জ গঠন করে মামলার একতরফা যে রায় দেয়া হবে তা হবে প্রতিহিংসামূলক, ফরমায়েশী।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব মামলা, অভিযোগ গঠন, আদেশ, রায় দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত বা ডা. জোবাইদা রহমানকে হেয় প্র্রতিপন্ন করতে পারবে না এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুন:প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে বিভ্রান্ত বা নস্যাত করতে পারবে না।
‘হীন এই কর্মকান্ডে’র পথ থেকে সরে এসে সুস্থ ও সুষ্ঠু রাজনীতির ধারায় ফিরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
গত ১৩ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। সেদিন তারেক-জোবাইদার পক্ষে ব্যক্তিগত খরচে আইনজীবী নিয়োগের আবেদনটিও নামঞ্জুর করেন আদালত।
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা ইতিপূর্বে বলেছি, এই ১/১১ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানোর একটা স্কীম কাজ করেছে যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে গত সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে অর্থাত ২০১৮ সালে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছিলো।”
‘‘ এখনো ঠিক একই কায়দায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়ার সকল প্রকারের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন।