খুন যে হবেন, আগে থেকেই জানতেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদের ভাই আশরাফ। বন্দি অবস্থাতেই সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন। ২০২২ সালের মার্চ মাসে আশরাফের সেই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ মেলেনি। তবে তাকে খুন হতে হলো আরো বছর খানেক পর।
২০২২ সালের ২৮ মার্চ, বন্দি আশরাফ সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে জানিয়েছিলেন, আর দু’সপ্তাহের মধ্যেই তাকে মেরে ফেলা হবে। কোনো এক পুলিশ অফিসার তাকে সেই হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন বলে জানান আশরাফ। তিনি এ-ও দাবি করেন, তার মৃত্যুর পর বন্ধ খামে চিঠি যাবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং রাজ্যের প্রধান বিচারপতির কাছে।
বছরখানেক আগে আশরাফের সেই দাবি নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে তার হত্যার পর। শনিবার রাতে তাকে এবং তার ভাই আতিক আহমেদকে যখন হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, ওই সময় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে দু’জনকে খুন করা হয়। পুলিশের চোখের সামনেই চলে হত্যাকাণ্ড।
আশরাফ বছরখানেক আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি সেই পুলিশ অফিসারের নাম নিতে পারব না। তিনি আমাকে বলেছেন, কোনো না কোনো অছিলায় দু’সপ্তাহ পর আমাকে জেল থেকে বের করা হবে এবং মেরে ফেলা হবে। আমার পরিবারের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকে খুন করার পর একটি বন্ধ খাম পৌঁছে যাবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং রাজ্যের প্রধান বিচারপতির কাছে।’
আশরফ আরো বলেছিলেন, ‘আমাকে দেখে কি আপনাদের মাফিয়া বলে মনে হয়? আমি এক সময় বিধায়ক ছিলাম। তিন বছর ধরে জেল খাটছি। জেলের মধ্যে থেকে কিভাবে আমি ষড়যন্ত্র করতে পারি?’
দু’সপ্তাহ পর অবশ্য আশরফকে কেউ খুন করেননি। আতিক এবং তিনি একসাথে খুন হয়েছেন শনিবার রাতে। পুলিশের চোখের সামনে স্লোগান দিতে দিতে তাদের গুলি করে খুন করা হয়। আততায়ীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের পর উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের নিরাপত্তাও বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা