• শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৫ অপরাহ্ন

ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩

কক্সবাজারে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলার থেকে অর্ধগলিত ১০টি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দুইজন
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ডুবন্ত ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে।

মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকিয়া আকতার বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলাটি করেন। সামশুল আলম ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটির মালিক।

মামলায় মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মৃত সামশুল আলমের ছেলে কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামালকে ১ নম্বর, কামালের ভাই আনোয়ার হোসেনকে (৪০) ২ নম্বর, বাবুল মাঝি ওরফে শুক্কুর কোম্পানিকে ৩ নম্বর ও মহেশখালীর মোহরাকাটার করিম সিকদারকে (৫৫) ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০-৬০ জনকে। তাঁদের মধ্যে কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামাল ও করিম সিকদারকে আজ বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ছয়জনকে হারিয়ে মহেশখালীর মিঠাছড়ি গ্রামে চলছে মাতম ট্রলার থেকে ১০ জেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার, হাত-পা বাঁধা ছিল ৬ জনের  ১০ জেলের পরিচয় পাওয়া গেছে, বরফ রাখার কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সামশুল আলমের সঙ্গে মহেশখালীর আরেক ট্রলারমালিক বাইট্যা কামাল ও তাঁর ভাই আনোয়ার হোসেনের বিরোধ চলছিল। দুই পক্ষের বিরুদ্ধে সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালানো এবং জলদস্যুদের সঙ্গে সখ্য থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং রোমহর্ষক। চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে এটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, পিবিআই ও সিআইডির ডিআইজিরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে মাঠে তৎপর রয়েছে পুলিশের পৃথক চারটি দল। কিন্তু কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত, এখন পর্যন্ত তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

 

নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আজ বিকেলে মহেশখালী থেকে বাইট্যা কামাল ও করিম সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ট্রলারের মালিক ও মাঝি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। দুজনকে কক্সবাজার আদালতে হস্তান্তর করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, পুলিশের অনুসন্ধান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ এবং বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ১০ জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার নেপথ্য কারণ কী, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সামশুল আলম ১০-১২ জন মাঝি-মাল্লাসহ ৭ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে নিজের ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে নামেন। ৮ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে সামশুল তাঁর (বাদীর) মুঠোফোনে কল করে জানান, জালে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। এর পর থেকে নানাভাবে চেষ্টা করেও তাঁর স্বামীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি।

এজাহারে আরও বলা হয়, সামশুল আলম সাগরে মাছ ধরতে গেলে আসামিরা বিভিন্ন সময় মাছ ধরতে বাধা ও হত্যার হুমকি দিতেন। পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁরা ৫০-৬০ জন মিলে সামশুলের ট্রলারে থাকা মাছ ও জাল লুট করেন। এতে বাধা দিতে গেলে সামশুলসহ অন্যদের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে, হাত-পা দড়ি ও জাল দিয়ে বেঁধে বোটের মাছ রাখার কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর কাঠ দিয়ে পেরেক মেরে কক্ষ আটকে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ট্রলারের তলা ফুটা করে দেন। এতে ট্রলারটি পানিতে ডুবিয়ে যায়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে আগামীকাল বুধবার সকালে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করবে পুলিশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ