সংগৃহীত ছবি
বিশ্বজুড়েই চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় ব্রিটেনেও প্রকট আকার ধারণ করেছে এসব সমস্যা। চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন দেশটির স্বল্প আয়ের মানুষেরা। বিশেষ করে দেশটির নিম্ন ও স্বল্প আয়ের নারীরা পড়েছেন বিপাকে। অর্থ সংকটে পড়ে বাড়ি ভাড়া মেটাতে পারছেন না তারা। যোগান দিতে পারছেন না অন্যান্য মৌলিক চাহিদারও। ফলে বেঁচে থাকার তাগিদে, বাধ্য হয়েই বাড়িওয়ালাদের মন রক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। লিপ্ত হতে হচ্ছে যৌনতায়।
কয়েকটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
দাতব্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়া, ট্রমা ও মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং অসহায়-দরিদ্র নারীদের সহায়তা তহিবল কমে যাওয়া এই সমস্যার মূল কারণ। এসব নারীকে আবাসনের বিনিময়ে বা অন্যান্য মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য যৌনপেশার দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকট বাড়ার কারণে বাড়িওয়ালারা ছাড় বা বিনামূল্যে বাসস্থানের বিনিময়ে এসব নারীর কাছে যৌনতা দাবি করছে। সুযোগ বুঝে তারা এটিকে এখন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
এটি বিশেষত অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থী নারীদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যারা এই আপত্তিজনক সম্পর্ক ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তাদের জন্য সংকট আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
দ্য বিয়ন্ড দ্য স্ট্রিটস দাতব্য সংস্থা বলছে, জীবনযাত্রার ব্যয় তাদের বিল ও ভাড়া মেটাতে ‘বেঁচে থাকা তাগিদে যৌনতা’য় ঝুঁকতে বাধ্য করছে, যার ফলে শোষণ ও অপব্যবহার বেড়েছে।
দাতব্য সংস্থার একজন সহায়তা কর্মী জানিয়েছেন, তিনি এমন নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন যারা যৌনতার ফাঁদে পড়েছেন। এছাড়া এমন অনেকের সাথে কথা বলেছেন যারা জীবনযাপনের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য যৌনতার বিনিময়ে কম বেতনের চাকরিতে যোগ দিতে বাধ্য হচ্ছে।
ল্যাটিন আমেরিকান উইমেনস এইড সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অভিবাসী নারীদের ‘ভাড়ার জন্য যৌনতার’ একাধিক ঘটনা দেখেছে। একটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এক অভিবাসী নারী ঘুমন্ত অবস্থায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। পরে ওই নিপীড়ক যৌনতার বিনিময়ে ওই নারীকে তার বাড়িতে থাকার প্রস্তাব দেন এবং ওই নারী তা গ্রহণ করেন।
বেলেন রুইজ, ল্যাটিন আমেরিকান উইমেনস এইড’র নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা কেন্দ্রের সমন্বয়ক, বলেছেন, “এটা অগ্রহণযোগ্য যে, এই ধরনের দুর্বল পরিস্থিতিতে নারীরা হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মুখোমুখি হয়, বারবার যৌন হয়রানির শিকার হয় এবং তারা কোনও প্রতিকারও পাচ্ছে না।” সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান