পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরতে পারেন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বুধবার রাতে এ কথা জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, বুধবার বাসায় ফেরার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় হাসপাতাল গঠিত মেডিকেল বোর্ড আরও একদিন তাকে হাসপাতালে থাকতে বলেছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সূত্র জানায়, নতুন করে তার স্বাস্থ্যের অবনতি কিংবা উন্নতি কোনোটাই নেই। তিনি আগের মতোই আছেন। এবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর জন্য। মূলত যেসব পরীক্ষা বাসায় রেখে করানো সম্ভব ছিল না, সেগুলো করানোর জন্যই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এর আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছিলেন, উনার কিছু অসুস্থতা ছিল, কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেই চিকিৎসায় তিনি মোটামুটি রেসপন্স করছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দির পর খালেদা জিয়া একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিল।
সর্বশেষ খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন। ডা. সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড আগে থেকেই তার চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তির পর মেডিকেল বোর্ডের এশাধিক বৈঠক হয়েছে।
অধ্যাপক ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হলেন, অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুর উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন, অধ্যাপক শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জিয়াউল হক এবং অধ্যাপক সাদেকুল ইসলাম।
এ ছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানসহ অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে থেকে খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি। লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমান সব সময় খোঁজ রাখছেন।