আজ ১৭ মে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের এই দিনে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। ফলে দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটে। দিনটি উপলক্ষে কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কাল রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলেও বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এর পর ৬ বছর দেশে ফিরতে পারেন নি শেখ হাসিনা। যদিও ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এর পর একই বছরের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। সে জন্য আধুনিক-উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে দিনটিতে ঐতিহাসিক বলে মনে করে তার দল আওয়ামী লীগ।
১৭ মে দলীয় প্রধানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথভাবে পালন করার জন্য দলীয় সকল স্তরের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সারাদেশে দল ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়ার পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের হত্যাকা-ের পর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তিনি গত চার দশকের বেশি সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘ ৪২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এক সময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তালাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
কর্মসূচি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বুধবার সকাল ১১ টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান। এরপর বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় দলের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশ নেবেন। আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এ ছাড়া শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সারা দেশে দোয়া-মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনা সভার কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সারা দেশের মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সকল ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির করা হবে। যার অংশ হিসেবে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সকাল ১১ টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ এ খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল ১০ টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হবে।