• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

আবাসন খাতে কালো মেঘ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩

ধরাছোঁয়ার বাইরে যাচ্ছে স্বপ্নের ফ্ল্যাট-বাড়ি বিনা প্রশ্নে ফ্ল্যাট ক্রয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকা দরকার : মো. জসিম উদ্দিন ,ড্যাপের কারণে আবাসন খাতের ব্যবসায় ভয়াবহ মন্দা চলছে : শামসুল আলামিন, সংকট থেকে উত্তরণে আবাসন খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে : মোহাম্মদ সোহেল রানা, ভবনের আয়তন নিয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তির যৌক্তিক সমাধান করা হবে : মো. আশরাফুল ইসলাম, গৃহায়ন শিল্পে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ।

রাজধানী ঢাকা এবং অনতিদূরে সুন্দর একটা বাড়ি থাকবে নয়তো একটা ফ্লাট থাকবে এই স্বপ্ন দেখেন বেশির ভাগ পেশাজীবী-কর্মজীবী মানুষ। ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত এমনকি নি¤œবিত্ত সবার স্বপ্ন সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফিরে চাই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস। তাই তো ঢাকার বাইরের জেলা থেকে অভিবাসী হয়ে ঢাকায় আসা মানুষের স্বপ্ন থাকে একটি আধুনিক অনুষঙ্গের মনোরম ফ্ল্যাটের।

কিন্তু ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্ল্যাটের দাম। ফলে উচ্চবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তরাই যেখানে ফ্ল্যাট কিনতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে, সেখানে মধ্যবিত্তের কথা বলাই বাহুল্য। উপকরণ স্বল্পতা ও সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের সংকটের ফলে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে ফ্ল্যাট ও ভবন তৈরির গতিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ২০১৬-৩৫ সালের জন্য বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রণয়ণ আবাসন শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ভবনের উচ্চতা, আয়তন অথবা আকার ইত্যাদির সীমারেখা বেঁধে দিয়ে ড্যাপ আবাসন শিল্পের উপর কালো মেঘের জমাট বাঁধিয়েছে।

এছাড়াও ব্যাংক ঋণ সহজলভ্য না হওয়ায় সম্ভাবনাময় আবাসন খাত চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। এতে করে পূর্বাচলসহ যে সব নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে সেগুলোতে বাড়ি-ঘর ও নতুন স্থাপনা গড়ে উঠছে না। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ‘কেউ গৃহহীন থাকবেন না’ কাযত অধরাই থেকে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংক ঋণ সহজ, ড্যাপের আইন সংশোধন এবং বাজেটে অন্তত ১০ বছরের জন্য কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হলে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবাসন খাতের প্রধান নির্মাণ উপকরণ ইট, সিমেন্ট, বালু ও রডসহ অন্য অনুষঙ্গের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা সংকটে ভুগছে আবাসন কোম্পানিগুলো। এ ছাড়া সব ধরণের নির্মাণসামগ্রীর চরম ঊর্ধ্বগতির ফলে কাজ বন্ধ রাখতেও বাধ্য হচ্ছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, ড্যাপের নতুন আইন এবং সবকিছুই দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে উচ্চমূল্যের কারণে ফ্ল্যাট যেন সোনার হরিণে পরিণত হচ্ছে।

গত কয়েক মাস থেকে দফায় দফায় বাড়ছে নির্মাণসামগ্রীর দাম। কয়েক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন গ্রেডের রডে টনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা বেড়েছে। এতে করে মন্দার কবলে পড়ে গেছে আবাসন শিল্প। রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব এর তথ্য মতে, বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ তৈরী অবস্থায় থাকলেও নেই ক্রেতা। দীর্ঘ মেয়াদী ব্যাংক ঋণের স্বল্পতা এবং সুদের হার বেশি হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে না ফ্ল্যাট, এমন তথ্য দিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষই। তবে, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রবণতা এবং ক্রেতা শূন্যতার জন্য দায়ি করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যাংক ঋণের অভাব এবং সুদের হার বেশি হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারছেন না তারা। ব্যাংকগুলো স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিলে আবাসন শিল্পের অচলাবস্থা কাটতে পাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে পূর্বাচলে হাজার হাজার গ্রাহক জমি ও প্লট বরাদ্দ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারছে না।

এদিকে ভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকাসহ কৃষি, প্রাতিষ্ঠানিক, নালা, বনাঞ্চল, উন্মুক্ত স্থান, যোগাযোগ, বন্যা প্রবাহ ইত্যাদি এলাকাসমূহ পরিকল্পনায় ড্যাপে রাখা হয়েছে। এ নতুন ড্যাপ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে রাজউক। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে বলে রাজউক সূত্রে জানা গেছে।

২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তবানায় রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব থেকে ৯টি প্রস্তাব করা হয়েছে, এ গুলো হচ্ছে, বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা ১৯ এ বর্নিত আইনও কর হার প্রচলন, ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিষ্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট কর ও ফি সর্বমোট ৭ শতাংশ নিধারণ করা, নামমাত্র রেজিষ্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে আবাসন খাতে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা প্রচলন করা, আবাসন শিল্প রক্ষার্থে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ নতুন ভাবে মূল্য সংযোাজন কর আরোপ না করা, গৃহায়ণ শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাসকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাব, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৫৩পি অনুসারে গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে সংগ্রহ করা, রাজউক ও সিডিএ-এর আওতাভুক্ত ও বহির্ভূত এলাকায় সকল জমির ক্ষেত্রে আয়কর আদেশ ১৯৮৪ এর ৫৩ এইচ ধারায় আরোপিত কর প্রত্যাহার, সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ৫ বছরে জন্য ডেভেলপারদেরকে অব্যাহতি প্রদান এবং বিকেন্দ্রীকরণ নগরায়ন ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শহর এলাকায় ৫ বৎসর এবং শহরের বাইরের এলাকায় ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে’র মাধ্যমে উৎসাহিত করণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিয়য়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্যোগী হলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ি ব্যাংক ঋণ দেওয়া সম্ভব।

জানতে চাইলে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন ইনকিলাবকে বলেন, আগামী অর্থবছরে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা চেয়েছি। সুযোগ দেওয়া হলে ভবিষ্যতে ওইসব বিনিয়োগকারী ট্যাক্স-নেটের আওতায় আসবেন। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নিবন্ধন ব্যয় তুলনামূলক বেশি। ব্যয় বেশি হওয়ায় ফ্ল্যাট বা প্লটের ক্রেতারা নিবন্ধনে উৎসাহিত হচ্ছে না। ফলে সরকার এ খাত থেকে রাজস্ব আয় কম পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে বাজেটে নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবি জানান। একই সঙ্গে এ জাতীয় ব্যয় কমানো হলে স্বল্পমূল্যে ক্রেতাসাধারণকে তাদের সামর্থ্যরে মধ্যে আবাসন সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে এ শিল্প স্থবিরতা থেকে মুক্তি পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ২০১৬-৩৫ সালের জন্য বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রণয়ণে বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ড্যাপের কারণে কাজ প্রায় বন্ধের পথে। আবাসনের মন্দা ব্যবসায় ড্যাপ এই খাতকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে। ড্যাপের কারণে ভবনের উচ্চতা, আয়তন অথবা আকার বর্তমানের মতো বহাল না রাখা হলে আবাসন ব্যবসা থাকবে না।

বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, দেশের স্বার্থে অর্থনীতির স্বার্থে আবাসন খাতে পাঁচ থেকে ১০ বছরের জন্য বিনা প্রশ্নে ফ্ল্যাট ক্রয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা দরকার। আগামী ১০ বছর পর্যন্ত এ সুবিধা রাখা হলে দেশে এ জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের এক কর্মকতা বলেন, বর্তমান বাজারে অবস্থার কারণে বেসরকারি হাইজিংক কোম্পানি গুলোর করুণ অবস্থা। ভবনের উচ্ছতা না থাকায় ইউনিট কমেছে, অন্যদিকে জমির দাম বাড়ছে তার সাথে ফ্ল্যাটের বিক্রি হচ্ছে না। ব্যাংক থেকে আগের মতো স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নিতে পারছে না।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, কোভিডের কারণে বাংলাদেশের আবাসন খাত বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাড়ি নির্মাণের জন্য সকল ধরনের উপকরণের বাজারদর অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানুষ বাড়ি নির্মাণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, একইসাথে আবাসন ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সংকট থেকে বের হয়ে আসার জন্য আবাসন খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

রাজধানীর আবাসন চাহিদা পূরণে প্লটভিত্তিক উন্নয়নের পরিবর্তে ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের বিধান করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন এলাকার জন্য নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) পাস করেছে সরকার। পরে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

ড্যাপের কারণে কার্যত আবাসন ব্যবসায়ীরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেছেন। রিহ্যাব জানায়, তাদের সদস্যদের রাজধানী ঢাকা ও আশপাশে ১ হাজার ৫০৪টি প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে নির্মাণাধীন অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ৩০ হাজার ৮০টি। বর্তমান বিক্রয়যোগ্য অ্যাপার্টমেন্ট সংখ্যা ১৫ হাজার ৪০টি। ইতিমধ্যেই বিক্রি করা ইউনিট সংখ্যা ৯ হাজার ২৪টি। আর অবিক্রিত ইউনিট সংখ্যা রয়েছে ৬ হাজার ১৬টি। অর্থাৎ দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত ২০২০ সাল থেকে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে প্রতি টন রডের দাম ছিল ৬৪ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ২০২০ সালে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের (৫০ কেজি) দাম ছিল ৪০০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা। এ ছাড়া ২ বছরের ব্যবধানে প্রতি ঘনফুট বালুর দাম গড়ে ২৫ টাকা, প্রতি বর্গফুট পাথরের দাম ৮০ টাকা ও থাই অ্যালুমিনিয়ামের দাম ১৭০ টাকা ও শ্রমিকের খরচ ৮০ টাকা করে বেড়েছে। এ ছাড়া ইট, গ্রিল, স্যানিটেশন ও বৈদ্যুতিক কাজের খরচও বেড়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজউকের ড্যাপ চূড়ান্ত হলে ফ্ল্যাটের দাম ৫০ ভাগ বাড়বে। এটা কার্যকর হলে ফ্ল্যাট ক্রেতাসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এ ছাড়া আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ২৬৯টি লিংকেজ শিল্প মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ফলে এর সঙ্গে জড়িত ৪০ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। এ ছাড়া জমির মূল্যও কমে যাবে। যাদের এ শহরে ন্যূনতম পরিমাণ জমিও রয়েছে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার সম্পদের পরিমাণ ও মূল্য হ্রাস পাবে। যেটা সরকারের ঢাকা অঞ্চলের ভোট ব্যাংকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া ঢাকা শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে ৫০ লাখ মানুষ। যেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ ছাড়া প্রস্তাবিত ড্যাপের এ ধরনের বিধানাবলিসহ এ মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত হলে কৃষি, ফসলি ও জলাধার ভরাট করে ভবন নির্মাণের পরিমাণ বাড়বে। যেটা দেশের খাদ্য সংকটের কারণও হতে পারে।

রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ড্যাপের ভবনের আয়তন নিয়ে আবাসন ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানিয়েছেন। সেটা যৌক্তিক পর্যায়ে সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এটার একটা যৌক্তিক সমাধান মিলবে। ড্যাপ কারও ক্ষতি করার উদ্দেশ্য নয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে এত আয়োজন। এখানে রাজউক বা পরিকল্পনাবিদদের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমরা সবাই মিলে ঢাকা বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করব। ঢাকা থেকে ৫০ লাখ লোককে সরে যেতে হবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, এটার কোনো ভিত্তি নেই।

আবাসন খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান শেলটেক (প্রাইভেট) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, গৃহায়ন শিল্পের বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা এ খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। অধিকাংশ ডেভেলপার অতি উচ্চসুদে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে তাদের পক্ষে ব্যাংক ঋণ ও সুদ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আয়করের উচ্চহারের কারণে ক্রেতারা আগ্রহ হারাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ