মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি
বিএনপির আন্দোলনকে বন্ধ করতে সরকার ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকার বিরোধীদলের সাড়ে তেরশ মামলা নিয়ে মাঠে নেমেছে। আগামী নির্বাচনের আগে কীভাবে এই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করে বিএনপিনেতাদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠনোর যায় সেই চেষ্টা করছে। যাতে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে গোল দিতে পারে।
আজ বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। অত্যন্ত ক্ষোভ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, যে মামলা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে পুনরায় শুনানি করে সেই মামলায় রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দেওয়া হলো। মৃত্যু ঘনিয়ে আসার আগে যখন কোনো আশা থাকে না, তখন কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়; সরকার হামলা-মামলা দিয়ে সেই চেষ্টাই করছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রী জেবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো অতিদ্রুত চালু করা হয়েছে। আত্মপক্ষের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এ নিয়ে কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে এবং পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার এমন নোংরা ষড়যন্ত্র করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে। অথচ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সারা দেশে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন সাত শতাধিক (নেতাকর্মী)। গত ১২ দিনে নতুন মামলা হয়েছে ১৫২টি। আসামি সাড়ে পাঁচ হাজার। ভয়-ত্রাস সৃষ্টি করে একই কায়দায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় তারা (আওয়ামী লীগ), কিন্তু মানুষ এবার তা সফল হতে দেবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই দানবীয় সরকারকে সরানোর যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা হামলা-মামলা দিয়ে দমানো যাবে না। এরা আমাদের কর্মসূচিতে আগ বাড়িয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। কেরানীগঞ্জে আমাদের নিপুণ রায়কে মেরে আহত করা হলো, অথচ তাকেই মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।