কয়লা সংকটের কারণে জুনের ২ তারিখ অর্থাৎ আগামী শুক্রবারের পর বন্ধ হতে যাচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এমন খবরে উদ্বিগ্ন পায়রা সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষ। কারণ, বর্তমানে পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রধান ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের প্রভাবে স্থবিরতা নামবে সমুদ্র বন্দরেও। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, এ সমস্যা সাময়িক।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, কয়লা না থাকায় ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। এখন ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বাকি একটি ইউনিট থেকে দিনে ৪৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যে কয়লা রয়েছে তাতে ২ জুন পর্যন্ত চলতে পারবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। ফলে আগামী ৩ জুন থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট সমুদ্র বন্দরটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এ পর্যন্ত পায়রা সমুদ্র বন্দরে মোট ৩১৬টি বিদেশি জাহাজ এসেছে। এতে আয় হয়েছে ৮৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়েই এসেছে ২৪২টি জাহাজ এবং অন্যান্য পণ্য নিয়ে এসেছে ৭৪টি জাহাজ। অর্থাৎ পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রধান ব্যবহারকারী পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এদিকে গত ২৫ মার্চ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সাড়ে ১০ মিটার গভীরতার ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চ্যানেল খনন করে তা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহারের ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশ সরকারের রিজার্ভ ফান্ডের সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই চ্যানেলটি তৈরি করা হয়। বেলজিয়ামের বিশ্বখ্যাত ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান জান ডে নুল এই ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন করে। তবে রিজার্ভ ফান্ডের টাকা বন্দরের উন্নয়নে ব্যবহার করলেও বন্দরটি পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবহার না করলে এবং দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করতে না পারলে বন্দরের আয়-ব্যয়ের হিসেবে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি হবে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক (ট্রাফিক) আজিজুর রহমান বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর একটি কোম্পানিকে নিয়ে গড়ে ওঠেনি। এখানে অনেক ধরনের কোম্পানি তাদের মালামাল আনা নেওয়া করবে। তবে এখন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের প্রধান কাস্টমার। তাদের তিন সপ্তাহের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকবে। এতে জাহাজ কম আসবে। আশা করছি সাময়িক এ সংকট কেটে যাবে, দ্রুত একটা সমাধান মিলবে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে যথেষ্ট জেনারেশন করার মত পাওয়ার স্টেশন রিজার্ভ আছে। সংকট কাটিয়ে দ্রুত কয়লা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কয়লা আসতে ২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সে কারণে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হতে পারে।