• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন

১১টার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিদ্যালয়ের টিনশেডের কক্ষ্, আমগাছের ছায়ায় চলছে পাঠদান।

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

গত কয়েক দিন ধরে মেহেরপুরে চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সেখানকার জনজীবন। জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। রোদের তীব্রতার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও। কারণ গরমের মধ্যেও বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।

মেহেরপুর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা শোলমারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। তীব্র দাবদাহে নাভিশ্বাস উঠেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে বিপর্যয় আরও বেড়েছে। ঢেউটিনের ছাউনি বেষ্টিত বিদ্যালয়টি বেলা ১১টার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যেখানে পাঠদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আগামী ৭ জুন থেকে শুরু হবে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা। তাই উপায় না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে থাকা আমগাছের ছায়ায় চলছে পাঠদান।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমগাছের ছায়ায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির আইসিটি বিষয়ে পাঠদান করাচ্ছেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল জাব্বার। তিনি বলেন, অতিরিক্ত দাবদাহে টিনশেডের কক্ষে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। আগামীকাল থেকে পরীক্ষা। এ সময় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি সেশন গুরুত্বপূর্ণ। তাই উপায় না পেয়ে গাছতলাতেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী শোলমারি গ্রামের মাহাবুব রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির উদ্যোগে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হবার পর জেলা পরিষদ পৃথকভাবে দুই কক্ষের দুটি পাকা ভবন নির্মাণ করে দেয়। যার একটি রুমে আর্থিক সংকটে জানালা-দরজা লাগানো যায়নি। সেখানে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। অপর রুমটি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাকি ক্লাসগুলো চলে টিনশেডের একটি লম্বা কক্ষে।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেশমি খাতুন বলে, দাবদাহের কারণে মাথার ওপরে টিনশেডের গরমে ঘামে শরীর ভিজে যায়। কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। শিক্ষার্থীদের অবস্থা বিবেচনা করে গত রোববার থেকে বিদ্যালয়ের আমগাছের নিচে ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রকৃতির ছায়ায় ক্লাস করতে ভালো লাগছে। তবে সূর্য ঘুরলে ছায়ার সঙ্গে তাদের ক্লাসও ঘুরে বলে জানায় রেশমি।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিয়া খাতুন বলে, আগামী ৭ জুন থেকে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই গরমে টিনশেডের ঘরে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না। এত গরমে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হারও নেমেছে অর্ধেকে।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব রহমান বলেন, বিদ্যুৎ সংকটের কারণে গরমে টিনশেডের ঘরে কোনোভাবেই ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। অসহনীয় দাবদাহে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে থাকতে পারছে না। সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তীব্রতা বাড়ে, তখন বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের গাছের ছায়াতে পালা করে ক্লাস নিতে হয়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি হয়ে যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ