তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা কোনও সংলাপের কথা বলি নাই। বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমরা মনে করি না।’ শুক্রবার (৯ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলাভিত্তিক সংগঠন বোয়ালখালী সমিতি, ঢাকার বার্ষিক মেজবান ও কৃতী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘আন্দোলন থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে সরকার সংলাপের কথা বলছে’ এ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চায়, নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, তাদের সঙ্গে সংলাপ করে কোনও ফায়দা নাই। বাংলাদেশে নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব বরং এসব কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চান।’
হাছান মাহমুদ বলেন, আমির হোসেন আমু সংলাপ নিয়ে যেটি বলেছিলেন, পরের দিনই তিনি সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রথমে তিনি যা বলেছিলেন সেটি তার নিজের অভিমত ছিল। আমাদের দল আওয়ামী লীগ, সরকার বা ১৪ দল কারও অভিমত ছিল না
সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বোয়ালখালীবাসীর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেনের অনেক সহযোদ্ধার বাড়ি এবং আস্তানা ছিল বোয়ালখালীতে। শহরের নিকটতম হওয়ায় বোয়ালখালীর মানুষ আগে থেকেই অন্য উপজেলার চেয়ে বেশি শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা ছিল। এই আধুনিক ও মোবাইল সংস্কৃতি’র যুগেও তাদের বলী খেলা এখনও প্রসিদ্ধ। চট্টগ্রামের মেজবান সংস্কৃতিও গত এক দশকে সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
সমিতির দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেন, অবশ্যই কালুরঘাটে নতুন কর্ণফুলী সেতু হবে। পদ্মা সেতুর মতো সেটিতে রেল ও সড়ক দুই সংযোগই থাকবে। এই সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে বর্তমান ঐতিহ্যবাহী কালুরঘাট সেতুর সংস্কারেও হাত দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার সড়ক দুই থেকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। এর ফলে বোয়ালখালীতে শিল্পায়ন বাড়বে, বলেন হাছান মাহমুদ।
গত ১৪ বছরে দেশের উন্নয়ন চিত্রের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৪ বছর পরে বিদেশ থেকে ফিরে আজ বোয়ালখালীর মানুষ নিজের এলাকা চিনতে পারে না। আগে দিনমজুর, রিকশাচালকদের দিনে সাড়ে তিন কেজি চালের সমান মজুরির জন্য আন্দোলন হতো। এখন ৫০ টাকা কেজি চালের সময়ও দিনে ১০ কেজি কেনার মতো আয় তাদের। আগে বিদেশিদের পুরোনো কাপড় ধুয়ে, আয়রন করে বাজারে বিক্রি হতো। এখন আমাদের রফতানি করা কাপড় বিদেশিরা পরে। গ্রাম-শহরের পার্থক্য ঘুচে গেছে। গ্রামের ছেলেরাও এখন থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরে।’
বোয়ালখালী সমিতি, ঢাকার সভাপতি মো. লিয়াকত আলী, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান আনসারী, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবদুস সোবহান সিদ্দিকী প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।