• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

শিশু ধর্ষণের অভিযোগে কুমিল্লার সেই কথিত পীর ঢাকায় গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩

কথিত পীর ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইন

কথিত পীর ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত
লিচুর প্রলোভন দিয়ে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে কুমিল্লার দেবীদ্বারের সেই কথিত পীরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাঁর নাম ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইন। রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে র‍্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

আজ সোমবার দুপুরে র‍্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

২ জুন দেবিদ্বারে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এই ঘটনায় ৬ জুন শিশুটির মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে র‍্যাব ১১ ও সদর দপ্তর। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাতে মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরীকে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার পীর ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।

কথিত এই পীর গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবকে জানায়, ২ জুন দুপুরে শিশুটি ইকবালের বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে যায়। সেখানে লিচু দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর আস্তানায় ডেকে নেন। এরপর শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। কথিত এই পীর ও তাঁর অনুসারীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখান। মামলার পর পীর ইকবাল গ্রেপ্তার এড়াতে তাঁর নিজ আস্তানা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।

গ্রেপ্তার ইকবাল কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার তথাকথিত একজন পীরের মুরিদ। প্রতারণা করতে নিজেই দীর্ঘদিন ধরে পীর সেজে বাড়িতে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন। তাঁর ধর্মীয় বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বলেও জানান র‍্যাব।

বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্থ করে সপ্তাহে এক দিন তাঁর আস্তানায় জমজমাট আসর বসিয়ে ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য দিতেন এবং নিজ আস্তানার বাইরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, ইকবালের আস্তানায় আগত লোকজন মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করত বলে জানা যায়। এ ছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এবং তাঁর আস্তানার বিভিন্ন আইডি ও পেজ খুলে আস্তানার প্রচার-প্রচারণা করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন।

ইকবাল কুমিল্লার একটি স্থানীয় কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে বিভিন্ন কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করতেন এবং স্থানীয় লোকজন তাঁকে প্রফেসর বলে ডাকত। একপর্যায়ে সে স্থায়ী কোনো চাকরি না পেয়ে সহজে টাকা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে স্থানীয় জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে কথিত পীর হিসেবে দাবি করেন।

ধর্ষণের পর এলাকা থেকে পালিয়ে প্রথমে কক্সবাজার ও পরে নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন ছিলেন। সর্বশেষ তিনি তাঁর স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর মিরপুরে এক পরিচিতের বাসায় আত্মগোপনে যান। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ