• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

তুই সাংবাদিক তো কী হইছে’ বলে বেধড়ক পিটুনি, মুমূর্ষু অবস্থায় চমেকে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩
ছবি : সংগৃহীত

 

চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক সাংবাদিকের মুখে গরম চা ছুঁড়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে উল্টা বেধড়ক পেটে লাথি মারতে থাকেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা।

সোমবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে একটি চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও ঢাকা স্টেট পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

অভিযুক্তরা হলো চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। এছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত আরো ১০-১২ জনের নাম পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘সন্ধ্যায় স্টেশনে চা খেতে গিয়েছিলাম। ছাত্রলীগের খালেদসহ বেশ কয়েকজন বসে ছিল সেখানে। একটি চেয়ার খালি থাকায় আমি সেটা নিয়ে আসার সময় খালেদ আমাকে বললো- ‘তুমি এটা কার অনুমতি নিয়ে নিচ্ছ?’ আমি খালেদকে আগে থেকে চিনতাম, ও আমাদের জুনিয়র। তাই বললাম ‘তুমি করে বলছো কেন? আমাকে চিনো?’ এরপর সে আমার সেশন জিজ্ঞেস করে। সেশন বলার সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে থাকা গরম চা’সহ চায়ের কাপ আমার মাথায় মেরে দেয়।’

তিনি আরো বলেন, এ সময় আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে সে বলে ‘তুই সাংবাদিক হইছোস তো কী হইছে?’ এ কথা বলেই তার সাথে থাকা ১০-১২ জন আমাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা চায়ের কাপ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে থাকে এবং পেটে লাথি মারতে শুরু করে। এর মধ্যে আরাফাত রায়হান বেশি মারধর করেছে। বাকিদেরও চিনি। তবে সবার নাম এখন মনে করতে পারছি না। আমার কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা আছে। পেটে আঘাত পাওয়ায় পেট ফুলে যাচ্ছে, খুব অসুস্থ বোধ করছি। আমি চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক।

এদিকে ওই সাংবাদিকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমার্জেন্সি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন তাকে।

মেডিক্যালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি বমি করে, তাহলে সিটিস্ক্যান করানো লাগবে। এছাড়া রোগীর কিডনিতে সমস্যা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।

প্রধান অভিযুক্ত চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ বলেন, চেয়ার নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। পরে তিনি খারাপ ব্যবহার করায় হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। মারধর করা হয়নি।

চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার বলেন, খবর পেয়ে সাথে সাথে রোগীকে দেখতে এসেছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেবো আমরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ