নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিন দিন থাকার পর সাধারণ বেডে পাঠানো হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মো. মারুফকে। মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল বলেই তাকে আইসিইউতে পাঠানো হয়। এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ নন। প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে বলে আজ তাকে প্লাটিলেট দেওয়া হবে। এর আগে তিনি মুগদা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে তাকে রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসিতে পাঠানো হয়।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি হাসপাতালে মারুফের মতো অনেক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি।
হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করছে শিশু মার্জিয়া। তার মা বলেন, “মাদারটেক থেকে এখানে বাচ্চা নিয়ে এসেছি। এখানে ৬ দিন ভর্তি ছিলাম। বাচ্চা এখন সুস্থ তাই আজকে বাড়ি যাব।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিএনসিসি হাসপাতালটি মূলত করোনা মহামারির সময় কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও টিকা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়। বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গত ১২ জুলাই থেকে এখানে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২২১ জন নানা বয়সী রোগী ভর্তি আছেন।
শনিবার ভর্তি হওয়া নতুন ৫৮ জন নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮৩ জন। মারা গেছেন একজন। আজকে নতুন রোগী ভর্তি ৫৮ জন।
৫৭০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যা আইসিইউ আছে। এখানে ৭১ জন ডাক্তার ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে মোট ভর্তি ৬৭ জন। চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় পুরুষ ওয়ার্ড। সেখানে সর্বোচ্চসংখ্যক অর্থাৎ ১৪১ জন রোগী ভর্তি আছেন।
হাসপাতালের পঞ্চম তলায় দায়িত্বরত মাধু রাণী বলেন, “প্রতি নিয়ত রোগী বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি ভালো চিকিৎসা দিতে। এই রোগীদের ভালো খারাপ তো সবসময় বুঝা যায় না। তবে আমার ওয়ার্ডে এখন যারা আছে সবাই মোটামুটি ভালো আছে।”
কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, “ডেঙ্গুর চিকিৎসা খুব বেশি কিছু না। ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট মূল লক্ষ্য এবং তার সঙ্গে যদি অন্য কিছু হয় যেমন, বমি, পাতলা পায়খানা বা রক্ত যায়। তখন আমরা অতিরিক্ত ওষুধ দিই। যদি কোনো রোগীর বেশি খারাপ হয় তাকে আইসিউতে পাঠাই। সেখানে ভালো হলে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে একদিন পর্যবেক্ষণ করে ছেড়ে দেই।”
হাসপাতালটিতে আইসিইউ থাকলেও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা নেই বলেও জানান কর্তব্যরত এই মেডিকেল অফিসার।