ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেছে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিশনের (এসকেপ) সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে এসকেপের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান মিকিকো তনাকার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে আখাউড়া স্থলবন্দরে আসেন।
পরে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বন্দরের সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠকে বন্দরের অবকাঠামোগত কিছু দুর্বলতাসহ বেশ কিছু দিক উঠে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে উত্তর পূর্ব ভারতের সাতটি অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশ থেকে সবধরনের পণ্য রফতানি হয়ে আসছে। পক্ষান্তরে গম, পেঁয়াজ আদা, ক্রাশিং পাথরসহ বেশ কিছু পণ্য ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এরই মধ্যে এই বন্দর দিয়ে রফতানি বাণিজ্যে অনেকটাই স্থবির হওয়ায় গতকাল সকালে পরিদর্শনে আসেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশনের এ প্রতিনিধি দল।
এ সময় তারা স্থলবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানি-রফতানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার (ত্রিপুরা) আরিফ মোহাম্মদ।
বৈঠক শেষে তিনি জানান, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এই বন্দরের সার্বিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। এ সময় বন্দরের ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আগামী দিনে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সড়ক এবং রেলপথে যোগাযোগ স্থাপিত হচ্ছে এ বিষয়গুলো ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কেমন হবে, সেগুলো জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে আমরা অবকাঠামো উন্নয়ন চেয়েছি। এর মধ্যে রফতানি করা মাছের জন্য একটি হিমায়িত কোল্ড স্টোরেজ, ওয়ার হাউজ ও যাত্রী টার্মিনাল চেয়েছি। এ ছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্য আমদানি চেয়েছি। আশা করি এই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, চার দেশের মধ্যে যেন ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি স্থলবন্দরের সুবিধা যেন বাড়ে এবং বন্দরের অবকাঠামো যেন উন্নত হয়- আগামীতে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে যেন দেশগুলো লাভবান হয় সেটিই ছিল আজকের আলোচনার মূল উদ্দেশ্য।
বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতিসংঘের ট্রান্সপোর্ট বিভাগের প্রধান আজহার জে ডিউক্রেস্ট, বিআইআইএস-এর গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোবারক হোসেন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আহাম্মদ খলিফা।
বিকালে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠকে বসেন। সেখানে আন্তঃদেশীয় রফতানি বাণিজ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এসকেপের ভূমিকা তুলে ধরেন। এর আগে দুপুরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া আগরতলা-রেলওয়ে কানেক্টিভিটি এবং চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ ঘুরে দেখেন।