নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও বেধড়রক মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার ফজরের নামাজের পর নিজ বাড়ি থেকে অটো রিকশায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আসার পথে শহরের চকবৈদ্যনাথ গুড়পট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, জনসমাবেশের প্রস্তুতির জন্য দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে রহিম নেওয়াজকে লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এদিকে এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের কর্মীদের লাঠিসোঁটা হাতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে দফায় দফায় মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে।
সকাল ১০টার দিকে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে সেখানে গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শিমুল। এসব ঘটনার পর কেন্দ্র ঘোষিত নাটোরের জনসমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শহরের আলাইপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশ করার উদ্যোগ নেয়। এ উপলক্ষ্যে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ ভোর পাঁচটার দিকে তার বাড়ি সদর উপজেলার ছাতনী গ্রাম থেকে অটো রিকশা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসছিলেন। তিনি শহরের চকবৈদ্যনাথ গুড়পট্টি এলাকায় পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর হামলা করে। তাকে লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। তিনি অচেতন হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
জেলা বিএনপির সদস্য কাজী শাহ আলম এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, হত্যার পরিকল্পনা করেই রহিম নেওয়াজের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি জনসমাবেশ সফল করার জন্য ভোরেই বাড়ি থেকে দলীয় কার্যালয়ে আসছিলেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আপাতত জনসমাবেশের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান হামলায় জড়িতের বিষয়টি অস্বীকার করে যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী ঘটনাস্থল চকবৈদ্যনাথ গুড়পট্টি এলাকায় ছিল না। পূর্ববিরোধের জেরে বিএনপির কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেছেন, জেলা বিএনপির সদস্যসচিবকে পেটানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। হামলাকারী ব্যক্তিদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তে সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।