মশক কর্মীদের জবাবদিহিতা বাড়াতে ‘বডি ক্যাম’ লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। মেয়র বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইতিমধ্যে বিটিআই প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই সপ্তাহের প্রয়োগকৃত বিটিআইয়ের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য ইভ্যালুয়েশন টিম মাঠে নামবে। ঠিকমতো সবাই কাজ করছে কিনা এটিও মনিটরিং করা হবে বডি ক্যামের মাধ্যমে।’
রবিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে স্প্রিংডেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানকালে এই আহ্বান জানান। শুরুতে ডিএনসিসি মেয়র স্কুলটির শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণ করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা করেন।
এ সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের গৃহীত সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে অংশ নিতেও আহ্বান জানান।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমি পুরো ডিএনসিসি এলাকায় যাচ্ছি। আমরা কেউ বসে নেই। সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছে। লার্ভা পেলে জরিমানা করা হচ্ছে। কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার ইমাম, শিক্ষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে সভা করছেন। সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালন অবশ্যই করবে, করে যাচ্ছে। কিন্তু জনগণকেও যার যার যায়গা থেকে দায়িত্ব নিতে হবে। জনগণকেও নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। সবাই ক্যাম্পেইনে যোগ দিন।’
মেয়র বলেন, ‘বর্তমানে সবাই ফেসবুক ব্যবহার করি। সবাইকে অনুরোধ করছি ফেসবুকে শেয়ার করুন কোথাও পানি জমিয়ে রাখা যাবে না, তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন। সবাই মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের মাঝে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পরিষ্কার রাখতে হবে। আমরা ছোটবেলায় সপ্তাহে একদিন সবাই মিলে স্কুল কলেজের আঙিনা পরিষ্কার করতাম। প্রতিটি স্কুল, কলেজ নিজদের আঙিনার পাশাপাশি আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিতে পারে৷’
বিদেশে গেলে কিন্তু আমরা নিজের কাজ নিজে করি জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘দেশেও আমাদের নিজেদের আঙিনা নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে লজ্জার কিছু নেই। সপ্তাহে অন্তত একদিন পুরো বাড়ি পরিষ্কার করলে আমরা সুরক্ষিত থাকতে পারবো। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আর একটিও মৃত্যু যেন না হয় সেজন্য সবাইকে সম্পৃক্ত হতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের আহ্বান করে মেয়র বলেন, ‘মশার কামড় থেকে বাঁচতে তোমরা ফুল হাতা জামা পরবা, মশারির ভিতরে ঘুমাবা। বাবা, মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানিসহ আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের জানাবে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। বাসাবাড়ি, বাড়ান্দা, ছাদ সবজায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা মেয়রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দেওয়ার ও প্রতি শনিবার সকালে দশটায় দশ মিনিট বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার অঙ্গিকার করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে তাদের নিয়ে স্কুলের আঙিনা ও স্কুলের প্রধান ফটকের পার্শ্ববর্তী ফুটপাত পরিষ্কার করেন।
সভায় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. এ.কে.এম শফিকুর রহমান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান প্রমুখ।