গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে কুপ্রস্তাবের ঘটনায় দায়ের করা পার্নোগ্রাফি মামলায় শাহিন চৌধুরী মিঠু (৪০) নামে এক টেইলার্স ব্যবসায়ীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে লক্ষ্মীপুরের আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিঠু লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সমসেরাবাদ এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে। তিনি পেশায় টেইলার্স (দর্জি) ব্যবসায়ী।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, আসামি মিঠুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ভিকটিম গৃহবধূ সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের জকসিন বাজার এলাকার এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী। ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে তার বড় মেয়ে মিঠুর কাছে দর্জির কাজ শিখতো। এতে মিঠুর তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল। এ সুযোগে গৃহবধূর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায়ই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমু ও ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে কথা বলতো। এক সময় মিঠু তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এরমধ্যে ভিডিও কলে কথা বলার সময় তিনি গৃহবধূর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে।
গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে গোপন ছবি ও ভিডিওর কথা বলে মিঠু তাকে কুপ্রস্তাব দিতো। কক্সবাজার যাওয়ার জন্যও প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ছবি ও ভিডিওগুলো আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে ঘটনাটি গৃহবধূ তার স্বামীসহ স্বজনদের জানায়। সবার সম্মতিতে ঘটনাটি র্যাব-১১ টহল টিমকে জানালে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর দুপুরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ এলাকার হক মঞ্জিলের সামনে থেকে মিঠুকে আটক করা হয়। পরে র্যাব তাকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করে। একইদিন গৃহবধূ বাদি হয়ে মিঠুর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, ২০২২ সালের ৩০ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইয়াকুব আলী আদালতে মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।