রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় আফরোজা আক্তার মিমি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাঁর বাবা আফসার উদ্দীন। নিহতের বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়ে একটি অপরাধের শিকার হয়ে গত মে মাসে মামলা করে। সেই মামলার তদন্ত দিয়ে পুলিশের ‘উৎপাতে’ অতিষ্ঠ মিমি আত্মহত্যা করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পল্লবী থানা পুলিশ বলছে, গত রোববার মেয়েটি দুর্ঘটনাবশত বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে।
সোমবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পরিবারের কাছে মিমির লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাড়িতে তাঁর দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে পরিবার। মিমির মৃত্যুর ঘটনায় পল্লবী থানায় এ দিন আত্মহত্যা প্ররোচনা আইনে মামলাও করেছেন তাঁর বাবা।
আফসার উদ্দীন সমকালকে জানান, আগে তিনি ডিওএইচএস এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। দুই বছর আগে স্ত্রীসহ তিনি লক্ষ্মীপুরে গ্রামের বাড়ি চলে যান। এখন ডিওএইচএসে স্ত্রীসহ তাঁর ছেলে ও তিন মেয়ে থাকে। মিরপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা প্রকৌশলে পড়ত মিমি। তিনি লক্ষ্মীপুর যাওয়ার বছরই পড়ালেখার কথা বলে বাসা ছেড়ে মেসে উঠেছিল মিমি। সে জানিয়েছিল, মেরি নামে এক মেয়ের সঙ্গে থাকে। গত বছর মেহেদি হাসান জনি নামের এক তরুণের সঙ্গে ওর পরিচয় হয়। জনি নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে মিমির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তারা ডিওএইচএস এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে শুরু করে। মিমি ও জনির বিয়ে হয়নি, কেবল এফিডেভিট করেছিল তারা। চলতি বছর মিমি অন্তঃসত্ত্বা হলে জনি তাকে গর্ভপাতে বাধ্য করে। মিমি অসুস্থ হয়ে পড়লে গত মে মাসে তাকে বাসায় নিয়ে আসেন। ওই সময় পল্লবী থানায় ধর্ষণ ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে জনির বিরুদ্ধে মামলা করে মিমি। পুলিশ জনিকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বের হয়ে আবার সে উৎপাত শুরু করে।
আফসার উদ্দীন আরও বলেন, জনির ঘটনায় মেয়ে যখন মানসিকভাবে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন আমি ওকে মানসিক হাসপাতালে রেখে এসেছিলাম। কিন্তু মামলার সাক্ষ্য দিতে হবেসহ এটা-সেটা বলে পুলিশই আবার ডেকে আনে। এর পর আমরা আর ওকে চিকিৎসা দিতে পারিনি। মেয়েটা আমার শেষ পর্যন্ত মরেই গেল।
পল্লবী থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, নিহত তরুণীর বাবা আত্মহত্যায় প্ররোচনা আইনে মামলা করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।