• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

আমি আর নিখোঁজ হওয়ার দিনটি পালন করতে চাই না

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

আমরা এক দশক ধরে ঈদ বা অন্য কোনো উৎসব পালন করতে পারি না। এটা আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। কেন আমি ঈদ করতে পারি না, কেন বাবার সঙ্গে বৈশাখী মেলায় যেতে পারি না। আমি আর নিখোঁজ হওয়ার দিনটি পালন করতে চাই না।’

অত্যন্ত ভারাক্রান্ত কন্ঠে এই কথাগুলো বলছিলেন নিখোঁজ বংশাল থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সোহেলের মেয়ে সাফা।

সোহেল যখন নিখোঁজ হন, তখন তার মেয়ে সাফার বয়স ছিল মাত্র দু’মাস। সাফার বয়স এখন ১০ বছর, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে সে। শিশুদের অনেকে বাবার হাত ধরে স্কুলে যায়, বাবাকে নিয়ে গল্প বলে। সাফা বাসায় ফিরে প্রশ্ন করে বাবা কোথায়? বায়না ধরে, বাবার সঙ্গে স্কুলে যাবে। উত্তর দিতে পারেন না সাফার মা নিলুফার ইয়াসমিন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমার অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের স্মরণে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাফা। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে শুধু সাফা নয় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা কথা বলেন। এদের মধ্যে এসেছেন কারও সন্তান, স্ত্রী, মা ও বোন। সবারই একটাই প্রার্থনা, অন্তত তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন ফিরিয়ে দেওয়া হউক।

নিখোঁজ ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাতেনের ১৭ বছরের মেয়ে আনিশা ইসলাম ইনশা। ২০১৯ সালে রাজধানীর শাহ আলী এলাকা থেকে এই ব্যবসায়ী নিখোঁজ হন। তার পরিবার নিখোঁজের জন্য একজন র‌্যাব কর্মকর্তাকে দায়ী করেন।

অনুষ্ঠানে আনিশা বলেন, ‘আমার বাবা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আমরা তার জন্য অপেক্ষা করছি। তখন আমার ছোট ভাইয়ের বয়স মাত্র দুই বছর। তবে নিখোঁজের বিষয়ে সে এখন জানতে চায়। সে জিজ্ঞেস করে বাবা কি এখনো বেঁচে আছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমার ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দেবেন?’

এই অনুষ্ঠানের জন্য জায়গা পেতে সংগঠনটিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন মায়ের ডাকের কো-অর্ডিনেটর আফরোজা ইসলাম আঁখি।

তিনি বলেন, আমরা প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছিলাম, তারপর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট। যখনই তারা শুনেছেন আয়োজক মায়ের ডাক, তারা জায়গা দিতে অস্বীকার করেছেন। শেষ পর্যন্ত আমরা এতো বাধার পরে আইডিইবি ভবনের অডিটোরিয়াম পেয়েছি।

মায়ের ডাকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সানজিদা ইসলাম তুলি বলেছেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার নথিভুক্ত নথিপত্রে গত ১৪ বছরে মোট ৬৫৯ টি বলপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। পরিসংখ্যানটি বাস্তবে তার চেয়ে তিনগুণ বেশি হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ