• সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

টাঙ্গাইলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাটের ফলন বেশি হয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলায় এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৫০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ২০ হেক্টর। এবার ৯৭০ হেক্টর জমিতে পাট বেশি উৎপাদিত হয়েছে। এ ছাড়াও গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে।

টাঙ্গাইলে চলতি মৌসুমে পাটের ফলন বেশি হওয়াসহ দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন পাট চাষিরা। সোনালি আঁশ আর রুপালি কাঠি বিক্রি করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা এ বছর পাট চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফল হচ্ছেন চাষিরা। জেলার ১২টি উপজেলায় এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৫০ হেক্টর। এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ২০ হেক্টর। এবার ৯৭০ হেক্টর জমিতে পাট বেশি উৎপাদিত হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এ বছর প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার বেল।

কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে পাট কাটাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া। পাটের আশানুরূপ ফলন ও রোগবালাই কম হওয়ায় এবার অধিক লাভের আশা করছে পাট চাষিরা। জেলার টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, নাগরপুর, বাসাইল, সখীপুর উপজেলায় শুরু হয়েছে জমি থেকে পাট কাটা কার্যক্রম। চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে ফলন ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা। বাজারে পাটের দাম বেশি থাকায় চাষিরা এবার অধিক লাভের আশা করছেন। পাটের আশ বিক্রি করে যেমন কৃষক টাকা পায়। তেমনি পাটের কাঠি জ্বালানী হিসেবে ও ঘরের বেড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পয়লা গ্রামের কৃষক বানিছ মিয়া বলেন, এবার ৩২ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছি। এতে প্রায় ১০ মণ পাট পাবো। পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। কিছুদিন আগে পাটের মণ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ছিল। এখন বাজার কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার টাকা। এ ছাড়া পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৮’শ টাকা ১০০ আটির বোঝা। এবার আমার খরচ বেশি হওয়ায় লাভ কম হবে। ৩২ শতাংশ জমিতে ২০টা শ্রমিক লেগেছে। যার প্রতি শ্রমিকের মজুরি ছিল সাড়ে ৪০০ টাকা।

দেলদুয়ার উপজেলার ছিলিমপুর বাজারের পাট ব্যবসায়ী মোছাব্বির হোসেন বলেন, আমরা স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে পাট কিনে, বাংলাদেশের বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি। এবছর ২৫০০-২৭০০ টাকা মণ দরে পাট কিনছি। মণে ৫০-৬০ টাকা দরে লাভ করে, বিভিন্ন মিল পার্টির কাছে বিক্রি করি। আমাদের এই বাজারে প্রতি শুক্রবার হাট বসে। প্রতি হাটে প্রায় ১ হাজার মণ পাট কেনাবেচা হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। পাট আবাদের সময় আমরা দেখি দেশীয় জাতের পাটের থেকে ভারতের পাটের বীজের প্রতি কৃষকের চাহিদা বেশি থাকে। বিজেআরআই-৮ যেটা রবি-১ নামে পরিচিত। আমরা এবছর রবি-১ জাতের বীজ বেশি সরবরাহ করেছি। দেশীয় পাটের মধ্যে এ জাতটি সবচেয়ে ভালো। এই জাতটি এবার প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা কৃষকদের পাট চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগতভাবে সহযোগিতা দিয়ে জেলায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছি। পাটের বাজার মূল্য বেশি থাকায় পাট চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাট চাষিদের সঙ্গে থেকে পাট আবাদ বৃদ্ধির কাজ করে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ