প্রায় চার বছর পার হতে চললেও শেষ হয়নি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ। এক বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় চার বছরেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার পরিষদ কমপ্লেক্সেও ভিতর মসজিদটির অবস্থান। নির্মাণ কাজেধীরগতিরকারণেক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও মুসল্লিরা।
জানা গেছে, মোহাম্মদ ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি লাইসেন্সে কাজটি করছেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মো. মোজাফফর হোসেন। কাজটির তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন এমপির স্থানীয় প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একজন এমপি মসজিদটির নির্মাণ কাজ করছেন তার খেয়ালখুশি মতো। যখন তার মন চায়, কাজ করেন। আবার কখনো কাজ বন্ধও রাখেন। নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন মুসল্লিরা। সারা জেলায় আটটি মডেল মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে। তার মধ্যে ইতোমধ্যে সাতটির কাজ শেষ হওয়ার পর, উদ্বোধনও হয়ে গেছে।
দেওয়াগঞ্জের এই মসজিদটির কাজ ৩০ জুলাই শেষ দেখিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে। অথচ এখনো মসজিদটির অনেক কাজ বাকি রয়েছে। কাজ শেষ না করলেও অগ্রিম বিলের জন্য গণপূর্ণ বিভাগকে চাপ সৃষ্টি করছেন ওই এমপি। অগ্রিম বিল না দেওয়ায় বাকি কাজগুলো তিনি করছেন বলে জানিয়েছেন মসজিদটির নির্মাণের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ণ বিভাগের একাধিক সূত্র।
গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নির্মাণ কাজের ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাব-ঠিকাদার হিসেবে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের এমপি মো. মোজাফফর হোসেন ২০১৯ সালের ২১ জুলাই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
২০২০ সালের ২২ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রায় চার বছর পার হতে চললেও এখনো প্রায় ১০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। এমপির কারণে ভয়ে নির্মাণ কাজ নিয়ে স্থানীয় কেউ মুখ খুলতেও সাহস পান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুসল্লি জানান, মসজিদের কাজটি অনেক দিন ধরে চলছে। সব মসজিদের কাজ শেষ হলেও, এই মসজিদটির কাজ শেষ হচ্ছে না। কাজের গুণগতমানও খারাপ। শুরু থেকেই কাজটির বিভিন্ন অংশে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। আর চার বছর হলেও, তিনি কাজটি শেষ করেন না। তার মধ্যে মসজিদটির অনেক কাজ বাকি রেখেই উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু এখনো বাকি কাজ শেষ করা হয়নি। এখন তো প্রায় কাজই বন্ধ।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্যে এমপি মো. মোজাফফর হোসেনের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। জামালপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে চাচ্ছেন না। উল্টো তারা অগ্রিম বিল চান। আমরা কাজ শেষ না হলে অগ্রিম বিল দিবো না। এমপি হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাচ্ছে না।