চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। ভারতে দাম বৃদ্ধি ও নতুন করে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো চাহিদা মতো এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) না দেওয়ার প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজের বাজারে। এতে বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ছাড়া অন্য কোনো দেশের পেঁয়াজ নেই। বন্যার কারণে ভারতে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতি টন পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রভাবে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
ভোক্তারা বলছেন, ভারত মাত্র রপ্তানিমূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। পাইকারি কিংবা খুচরা বাজারে এসব বাড়তি মূল্যের এক কেজি পেঁয়াজও আসেনি। অথচ ভোক্তাদের কাছ থেকে একদিনেই কেজিতে ২০ টাকা বাড়তি নিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা অরাজকতা।
উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০ টকায়। দুদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে একদিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়। রোববার সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়। অর্থাৎ একদিনেই দাম বেড়েছে ২০ টাকা।
বারইয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল হকে বলেন, বর্তমানে বাজারে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে সেগুলো বাজার পর্যন্ত আসতে খরচ পড়েছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা। কিন্তু ভারত রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেওয়ার ঘোষণার পরপর প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকা মুনাফা করছেন পাইকারেরা।
বড়দারোগাহাট বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের বাজার দুদিন ধরে বাড়তি। আসলে ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। সেখানেও দাম বেড়েছে। ভারত তাদের বাজার নিয়ন্ত্রণে রপ্তানিমূল্য বেঁধে দিয়েছে। স্থলবন্দরগুলোতে এরই মধ্যে দাম বেড়েছে। তাই বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তারা একেক সময় একেক অজুহাতে দাম বাড়ায়। এখন বলছে ভারত রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছে, তাই দাম বেড়েছে। বাজারে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ আছে, সেগুলো তো দুই সপ্তাহ আগে আমদানি করা। প্রশাসনের উচিত পেঁয়াজের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করে অভিযান পরিচালনা করা।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে বিষয়টি বাজারে গিয়ে সরেজমিনে দেখবো। এরপর যদি ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকে তাহলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।