নিউইয়র্কে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক আন্তর্জাতিক এক সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্র সফররত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত দৃঢ় আশা প্রকাশ করেছেন, ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্য অর্জর করবে। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সামগ্রিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি নিরবিচ্ছন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে পেরেছে। যার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ৬ ভাগের ওপরে রয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের ওয়ান ইউএন প্লাজায় মিলেনিয়াম হিলটন হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়নের পথে: এমডিজি’র অভিজ্ঞতার আলোকেই এসডিজি অর্জন’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজক ছিল আন্তর্জাতিক থিংঙ্ক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি এন্ড গভার্ননেন্স (আইপ্যাগ)। এতে সার্বিক সহযোগিতা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। উদ্বোধনী পর্বে বক্তৃতা দেন ইউএনডিপি’র ব্যুরো অফ পলিসি এন্ড প্রোগ্রাম সার্পোট-এর সহকারি প্রশাসক ও পরিচালক এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মাগদি মার্টিনেজ সোলিমান।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মানবসম্পদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পাবলিক সেক্টরে জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসকল পদক্ষেপের ফলে ১৯৯১ সালে যেখানে দারিদ্র্যের হার ৫৬ শতাংশ ছিল তা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে ২০১০ সালে ৩১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ও ভিশন ২০২১ এর সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে আইসিটি ব্যবহার করে নারী ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
সেমিনারে স্বাগত ভাষণ দেন আইপ্যাগ-এর চেয়ারম্যান প্রফেসর সৈয়দ মুনির খসরু। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে সফলতার সঙ্গে এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ পূরণে এর বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ঘনিষ্ট সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থমন্ত্রী এমডিজি অর্জনের কৌশল ও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, এমডিজি গ্রহণ করার আগেই ১৯৯৯ সালে আমরা এর বাস্তবায়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই এবং নিজেদের মতো করে লক্ষ্য স্থির করি। আমাদের নিজস্ব সম্পদ এবং যা কিছু উন্নয়ন সহযোগিতা পাওয়া যায় তা দিয়েই এমডিজি বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেই। আমাদের এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে মর্মেও অর্থমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এমডিজি থেকে এসডিজিতে উত্তরণ, এমডিজির সাফল্য ও অভিজ্ঞতার ব্যবহার, স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য এসডিজি’র চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ এবং এসডিজি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে উন্নয়ন অর্থনীতির ভূমিকা, এসকল বিষয় নিয়ে সেমিনারটিকে চারটি সেশনে ভাগ করা হয়।