বিএনপি-জামায়াতের ঘোষিত তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিনে রাজধানীর উত্তরা আজমপুর এলাকায় একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল ৭টার পর পরিস্থান পরিবহনের বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উত্তরা-পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও বাসটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ নানা দাবিতে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিল বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। শেষে তাদের দাবি এক দফায় পরিণত হয়।
মো. জহিরুল ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকালে অফিসের জন্য বের হয়ে আজমপুর বাসস্টানে এসেই দেখি দুর্বৃত্তরা পরিস্থান পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। জানতে পেরেছি বাসটিতে ২/৩ জন যাত্রী ছিল, তাদের নামিয়ে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসটিতে আগুন দিয়ে সটকে পড়ে। তবে এতো কোনও হতাহতে ঘটনা ঘটেনি।
অবরোধের প্রথমদিন মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দিনভর নারায়ণগঞ্জ-কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কুলিয়ারচরে নিহত হয়েছেন দুজন। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দুই পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে আহত করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বাস ও অ্যাম্বুলেন্সে। এছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।
অবরোধের দ্বিতীয়দিন বুধবার রাজধানীতে চারটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরমধ্যে মিরপুরে কাফরুল থানার গেটের সামনে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্যামলী ও মুগদা এলাকায় আরো তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অপর দিকে অবরোধের কারণে রাজধানীর বাসটার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। যাত্রী স্বল্পতার কারণে সদরঘাট থেকে অধিকাংশ লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি, মহাসমাবেশে হামলা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলছে। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে চলবে আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত।