• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন

মেয়াদ বৃদ্ধি ইস্যুতে বিজিএমইএ ও সরকারের সঙ্গে বসছে অ্যাকর্ড

আপডেটঃ : রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭

বাংলাদেশে ইউরোপের ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত কারখানার পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ড কার্যক্রমের মেয়াদ বৃদ্ধি ইস্যুতে কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও সরকারের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে অ্যাকর্ডের স্টিয়ারিং কমিটির একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর দুই দিন পর বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাদা বৈঠক হবে। বৈঠকে অ্যাকর্ড এ পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরবে। চলমান সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি এটি অব্যাহত রাখার প্রয়োজনের বিষয়টিও তুলে ধরবে বলে জানা গেছে। এছাড়া মেয়াদ শেষে দায়িত্বভার গ্রহণে সরকারি উদ্যোগের প্রস্তুতির বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। অ্যাকর্ড স্টিয়ারিং কমিটির হয়ে এতে অংশ নেবেন বিভিন্ন ব্র্যান্ড, শ্রম অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

 

আগামী বছরের মে মাসে বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের পাঁচ বছরের কার্যক্রমের মেয়াদ পূর্ণ হবে। ওই সময়ের পর আরো তিন বছর এ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে গত জুনের শেষদিকে তারা একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজিএমইএ ও সরকার। বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে, সরকারের নেতৃত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী তদারক কমিটি হবে।

 

অ্যাকর্ড চাইলে এর আওতায় কাজ করতে  পারে। কিন্তু নিজেদের মতো করে থাকার সুযোগ নেই। অ্যাকর্ডের মেয়াদ বাড়ানোর ইস্যুতে উচ্চ আদালতও গত বৃহস্পতিবার রুল ইস্যু করেছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

 

সমপ্রতি ফ্রান্সের প্যারিসে মেয়াদ বৃদ্ধি ইস্যুতে বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে অ্যাকর্ড স্টিয়ারিং কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে অ্যাকর্ডের একতরফা সিদ্ধান্ত মানা হবেনা বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমপ্রতি এক সেমিনারে ইস্যুটি তুলে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, অ্যাকর্ডকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি। ব্যবসা করতে পারেন, নাও পারেন। কিন্তু কুত্সা রটানোর চেষ্টা করবেন না। চাইলে চলে যেতে পারেন। এ প্রসঙ্গে ডিজনি নামে একটি ব্র্যান্ডের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা চলে গেছে, আবার ফেরত এসেছে।

 

সূত্র জানিয়েছে, আগামীকালের বৈঠকেও বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে এমন অবস্থানই জানানো হবে। ইতিমধ্যে আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স আগামী বছরের পর না থাকার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তারা চায় একটি স্বচ্ছ ও শক্তিশালী কমিটির কাছে এ দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে। যাতে সংস্কার তদারকি প্রক্রিয়া চলমান থাকে।

 

তবে সংস্কার তদারকিতে এখনো সরকারি উদ্যোগে এ ধরনের শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। যদিও এ বিষয়ে সরকার ও পোশাক মালিকদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় উদ্যোগে যে সব কারখানার সংস্কার চলমান রয়েছে, তাও আশাব্যাঞ্জক নয়। ফলে এ ব্যবস্থায় অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের আস্থা তৈরি করাও সহজ নয়।

 

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে প্রায় ১২শ’ শ্রমিকের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষার উদ্যোগ নিতে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় তিনশ’ ব্র্যান্ড। এসব ব্র্যান্ডের কাছে পোশাক রপ্তানিকারক প্রায় ২২শ’ কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করে সংস্কার কার্যক্রম দেখভাল করছে উভয় জোট। আগামী বছরের মাঝামাঝি তাদের এসব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু এ কার্যক্রম আরো তিন বছর চালিয়ে নিতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাকর্ড।

 

ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অ্যাকর্ডের কর্তৃত্বও বাড়ানোর কথা বলা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অ্যাকর্ড পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন ইস্যুতে কাজ করা এবং তাদের কার্যক্রম নেদারল্যান্ডের আইন অনুযায়ী চলবে বলেও বলা হয়। এর পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় সরকার ও কারখানা মালিকপক্ষ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ