বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, বাংলাদেশকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কিছুই দেখছি না। বাংলাদেশে সে পরিস্থিতিও নেই।
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সব কিছুই হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমেরিকা থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের সঙ্গে এই চিঠির সম্পর্ক নেই। এ চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো চাপ অনুভব করছে না। আমরা প্রতিনিয়ত এসব নিয়ে কাজ করছি। সামনে দেশের শ্রমিকদের অধিকার কীভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেদিকে জোর দিচ্ছি।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কিছু অবজারভেশনের কথা রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আইএলওর বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে কিছু কথা আছে। আমরা সেটা উন্নত করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি এ চিঠি নতুন কিছু না। আমেরিকান এ নীতি সব দেশের জন্যই৷
বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে। এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে বাণিজ্য সচিব বলেন, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে আছে বলে আমি মনে করি না। আর বাণিজ্যক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ বিশেষ কোনো সুবিধা পায় না। যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। ১৫ শতাংশের বেশি শুল্ক দিয়ে আমেরিকাতে আমাদের রপ্তানি করতে হয়। কাজেই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। বরং অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য করে, যেখানে গণতন্ত্র নেই। যেখানে একদলীয় শাসন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নেই। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা অনেক উন্মুক্ত, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা আছে। সেখানে বাণিজ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে বলে মনে করি না।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ শ্রমনীতিতে বাংলাদেশ নিয়েও কথা আছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, সংবাদমাধ্যমে আমরা দেখেছি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটা সমঝোতায় সই করেছেন। যেখানে বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। এটা সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। আমরা কিন্তু অনেক বছর ধরে এসব ইস্যুতে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে গত ১০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমরা অনেক বেশি যুক্ত হয়েছি। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমাদের মধ্যে মতবিনিময় ও বৈঠক হয়। গত নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। গেল ২০ সেপ্টেম্বর টিকফার বৈঠক হয়েছিল। কাজেই বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কিছু বক্তব্য আছে। আমরা সেটা উন্নত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছি।