ব্যাংক ঋণে সুদহার কমিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ও অগ্রণী। শিল্প ঋণে ২ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার কমিয়ে ১১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে ব্যাংক দুটি। এর আগে সুদহার ছিল ১৩ শতাংশ।
পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসাপেক্ষে জনতা ব্যাংক নতুন সুদহার চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এবং অগ্রণী ব্যাংক সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করেছে। সরকারি খাতের আরও চারটি ব্যাংক শিগগির তাদের ঋণের সুদহার কমাবে বলে আভাস মিলেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক ১৩ শতাংশ সুদে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্পে মেয়াদি ঋণ বিতরণ করছিল। এসব ক্ষেত্রে সুদহার ২ শতাংশ কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার সব ক্ষেত্রে সুদহার কমানোর বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে শাখা ব্যবস্থাপকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে ১ অক্টোবর থেকে নতুন এ সুদহার হিসাব করতে বলা হয়েছে।
একইভাবে ব্যাংকটি চলতি মূলধনের ওপর ঋণের সুদহার ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১-১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাসন খাতেও সুদহার ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১-১২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংক গত সেপ্টেম্বরে ঋণের সুদহার কমায়। অন্য সব সরকারি ব্যাংকের চলতি মাস থেকে নতুন সুদহার কার্যকর করার কথা রয়েছে। এর আগেও সরকারি ব্যাংকগুলো কয়েক দফা সুদহার কমায়।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, ১ অক্টোবর থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১৩ থেকে ১২ এবং ১২ থেকে ১১ শতাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে।
ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে আমানতের সুদহার কমলেও সম্প্রতি একটু করে বাড়ছে। মূলত দীর্ঘ সময় পর বেসরকারি খাতে ঋণ চাহিদা বৃদ্ধির ফলে এমনটি হয়েছে।
গত আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ হয়েছে। গত পঁাচ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। বেসরকারি খাতে ঋণ বৃদ্ধির এ প্রবণতায় গত আগস্টে ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদহার বেড়ে ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশে ওঠে। আগের মাস জুলাইয়ে যা ছিল ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এর আগের মাস শেষে ছিল ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত তিন মাসে এভাবে সুদহার একটু করে বেড়েছে। দেশে বিদ্যমান ৫৭টি ব্যাংকের বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার শাখা রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর শাখা সংখ্যা পঁাচ হাজারের মতো। এর ফলে এসব ব্যাংকে ঋণে সুদহার কমানো হলে তার প্রভাব পড়ে অনেক বেশি।
প্রসঙ্গত, মুক্তবাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহার নির্ধারণ করতে পারে না। তবে ব্যাংকগুলো নিজেরা যে কোনো সদ্ধিান্ত নিতে পারে।