• রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

রওশন এরশাদ দলের কেউ না: চুন্নু

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
ফাইল ছবি

সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর জাতীয় পার্টির (জাপা) বিশ্বাস বেড়েছে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকবে জাতীয় পার্টি। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কি না জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, আমরা নির্বাচন করতে এসেছি। নির্বাচন থেকে চলে যাওয়ার জন্য, নাটক করার জন্য আসিনি। নির্বাচন করবো এবং নির্বাচন করে আগামীতে ক্ষমতায় যাবো সেই স্বপ্নেও আমরা বিভোর।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে যাবে সে রকম চিন্তাই আমাদের মধ্যে আছে। কাজেই নির্বাচন থেকে চলে যাবো কেন। নির্বাচন করার শর্ত হিসেবে আমাদের একটাই দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ এমন হতে হবে যেন ভোটারদের আস্থা আসে। আর কোনো দাবি আমাদের নেই।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জোট-মহাজোটের বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে কোনো দরখাস্ত করিনি। আরপিও অনুযায়ী যদি জোট-মহাজোট করতে হয়, তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত দিয়ে জানিয়ে দিতে হয়। আমরা জানাইনি কারণ আমরা প্রথম থেকেই জোট-মহাজোটে যাওয়ার সিদ্ধান্তে নেই।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জাপা মহাসচিব বলেন, গত রাতের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে আমরা অনেকক্ষণ আলাপ করেছি, খোশ-গল্প করেছি। নির্বাচন কীভাবে, যাতে ভালোভাবে হয়। ভোটাররা কীভাবে আসবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী হবে, প্রশাসনের কী ভূমিকা থাকবে, শৃঙ্খলা বাহিনীর কী ভূমিকা থাকবে, নির্বাচন কমিশনের কী ভূমিকা থাকবে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের কী ভূমিকা থাকবে—এসব অনেক আলোচনা করেছি।

জাপাকে বিশ্বাস না করলেও ভালো করে রাতে ভোজ দিয়েছেন উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, নৈশভোজ আমাদের খেতে দিয়েছেন, আমরা খেয়েছি। পেট ভরে খেয়েছি। কাজেই আমার মনে হয় না যে, উনারা যে বলছেন বিশ্বাস করেন না; বিশ্বাস না করলে কারও বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে এত আলাপ করে খাওয়াতেন না নিশ্চয়ই।

অবিশ্বাসের কথা লোক দেখানো না কি রাজনৈতিক বক্তব্য জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, অবিশ্বাসের কথা আমি বলিনি। যিনি বলছেন, তিনি তার উত্তর দিতে পারবেন। জাতীয় পার্টি সবাইকে বিশ্বাস করে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টি কী প্রশ্ন করেছে এ প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, না, আমি কথাটা জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করিনি। কারণ তাদের সঙ্গে যখন কথা হয়েছে, তাদের ব্যবহারে আমি আপ্লুত। তাদের কথা-বার্তায় আমি খুশি যে, এ কথা আর জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করিনি।

জিএম কাদেরকে অনেক দিন ধরে সামনে দেখা যাচ্ছে না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, উনি তো এখনো আছেন পার্টি অফিসে। জিএম কাদের সাহেব মনে করেন আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে আমার খুব একটা ভালো সম্পর্ক। তাই আমাকে বলেছেন, তুমি উনাদের সঙ্গে কথা বলো। মান-অভিমান থাকবে কেন? আমরা তো নির্বাচনে যাচ্ছি, মান-অভিমান থাকলে কি নির্বাচনে যেতাম!

তিনি গণমাধ্যমের সামনে আসছেন না কেন, জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব বলেন, আসবেন না কেন? আসার মতো কোনো প্রয়োজন তো উনি দেখছেন না। আমিই তো চালিয়ে যাচ্ছি উনার পক্ষে। উনি নিজে বলছেন, কথার সময় এখনো আসেনি। অবশ্যই কথা বলার সময় এলে উনি নিজে বলবেন।

রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে বলেছেন, তিনি নির্বাচনে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জিএম কাদের যেতে দেননি। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আপনাদের সঙ্গে জোট না করার আহ্বান জানান। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, উনাকে, উনার ছেলেকে এবং আরেকজনকে আপনাদের মাধ্যমে বারবার বলেছি। উনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। উনি নিজেই বলেছেন নির্বাচন করবেন এবং ফরম নেবেন। আমি বলেছি, আপনি নির্দেশ দিলে ফরম আমি আপনার বাসায় দিয়ে আসবো। উনি বলেছেন লোক পাঠাবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন রাত ১০টা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর তিনি সংবাদ সম্মেলনে বললেন যে, নির্বাচনে যাবেন না। এখন দোষ কার আপনারা চিন্তা করবেন।

দলের ভেতরে কোনো বিভক্তি আছে কি না জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, আমি আবারও বলছি, দলে কোনো বিভক্তি নেই।

রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে এর কোনো অর্থ দাঁড়ায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এগুলো আমার দল কিছু মিন করে না। তিনি বিরোধীদলের নেতা, সেই হিসেবে সংসদ নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এরসঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই। ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।

দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো কি না, জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, সাংগঠনিকভাবে আমি কোনো দ্বন্দ্ব দেখি না। বিরোধীদলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমি বা জিএম কাদের যেটা বলি সেটা হলো জাতীয় পার্টির কথা। আমি জানি না, এক দলের কাছে আরেক দলের নালিশ চলে কি না। এটা রাজনৈতিক কোনো সংস্কৃতিতে পড়ে কি না, আমার নতুন করে স্টাডি করতে হবে।

রওশন এরশাদ বলেছেন, আপনারা যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাতে তার কোনো সমর্থন নেই— এ ব্যাপারে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমি বুঝি দলের কেউ যদি নেতৃত্বের বাইরে যায় তাহলে অনৈক্য। দলের কোনো নেতৃত্ব তো বাইরে যায়নি। উনি আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, দলীয় কোনো পদ হোল্ড করেন না। উনি দলের কেউ না। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলংকারিক পদ। নির্বাহী কোনো ক্ষমতা তার নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ