আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘আমরা খবর পাচ্ছি— নির্বাচনকে ঘিরে সব আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন গুপ্ত হত্যার দিকে যাবে।’ শীর্ষক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ওবায়দুল কাদের হয়তো অবলীলায় তাদের নীলনকশার অংশ হিসেবে গুপ্ত হত্যার বিষয়ে আগাম পরিকল্পনাটি বলে ফেলেছেন। তা না-হলে তিনি কী করে জানলেন যে, বিএনপি গুপ্ত হত্যা ঘটাবে?
গত শনিবার (৩০ ডিসেম্বর ২০২৩) বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘আমরা খবর পাচ্ছি, নির্বাচনকে ঘিরে সব আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন গুপ্ত হত্যার দিকে যাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য ক্ষমতাসীনদের গভীর ষড়যন্ত্র ও নীলনকশার অংশ বলে দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। রিজভী বলেন, শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থনে আওয়ামী লীগের যে চিরন্তন ‘সেখানে নিজেরা অপকর্ম করে অন্যের ঘাড়ে তার দায় চাপানোর রাজনীতি’ তারা সেটার আবারও পুনরাবৃত্তি করার চক্রান্ত করছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে অ্যাডভোকেট রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি নিয়ে ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন তা ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত।
রিজভী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কারা সন্ত্রাসী কায়দায় সব দল বন্ধ করে, সব সংবাদপত্র বন্ধ করে, কথা বলার স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে বাকশাল করেছিল? সে ইতিহাস এ দেশের জনগণ জানে। গুম, গুপ্ত হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের। বিএনপি এদেশের গণতন্ত্র ও জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র তো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সুতরাং যারা গুপ্ত হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি করে, তাদের মুখেই গুপ্ত হত্যার কথা মানায়। সেজন্যই ওবায়দুল কাদের হয়তো অবলীলায় তাদের নীলনকশার অংশ হিসেবে গুপ্ত হত্যার বিষয়ে আগাম পরিকল্পনাটি বলে ফেলেছেন। তা না হলে তিনি কী করে জানলেন যে, বিএনপি গুপ্ত হত্যা ঘটাবে?
রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাজশাহীতে দুজন চিকিৎসক এক রাতে নিহত হয়েছে। কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দলের জাকির হোসেনকে পুলিশ ধাওয়া করে। পরে তার লাশ পাওয়া যায়। বিএনপির গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অদ্যাবধি ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এগুলো কারা ঘটিয়েছে?
বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ মনে করেন, ‘অতএব, প্রমাণিত হয় যে, এসব ঘটনা সরকারেরই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা। কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পনা করে এটি করা হচ্ছে। গোটা জাতিকে স্তব্ধ করে দিতে এই পন্থা অবলম্বন করেছে সরকার। দেশে টার্গেট কিলিং শুরু করেছে সরকার। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন ঘিরে সরকারের এ ধরনের আরও কিছু জঘন্য পরিকল্পনা থাকতে পারে— যেটি তারা কৌশলে বিএনপি’র দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে জনমনে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা চালালেও প্রকারান্তরে তাতে নিজেদের সর্বনাশা চক্রান্তেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় সেটির প্রমাণ পাওয়া যায়।
রিজভী বলেন, ‘সুতরাং, আমরা দেশপ্রেমিক জনগণকে আওয়ামী লীগ সরকারের দূরভীসন্ধিমূলক নীল নকশা গুপ্তহত্যা ও নাশকতার চক্রান্ত সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা সরকার নিজেরাই কোনও না কোনও নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে এগোচ্ছে। এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মীসহ সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’