ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পার্থিব সব কাজে সাফল্য ও অগ্রগতি লাভের জন্য ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠার জুড়ি নেই। ভোর বা দিনের শুরুতে সবচেয়ে বেশি কল্যাণ থাকে।
শুধু ইবাদত-বন্দেগিই নয়, সাধারণ কাজের জন্যও সবচেয়ে যথাযোগ্য ও বরকতপূর্ণ সময় এটি।
প্রিয়নবী (সা.) ভোরবেলার কাজে বরকতের জন্য দোয়া করেছেন। হজরত সাখার আল-গামেদি (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এ দোয়া করেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুকে বরকতময় করুন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬০৬) এজন্যই রাসুল (সা.) কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। বর্ণনাকারী বলেন, হজরত সাখার (রা.) তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তার ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয়। তিনি প্রভূত প্রাচুর্য লাভ করেন।
সকালবেলার ঘুম অনেক সময় শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনুরূপভাবে সফলতা অর্জনেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। হজরত ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা রাসুল (সা.) আমার ঘরে এসে আমাকে ভোরবেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলেন, তখন আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিলেন এবং বললেন, মামণি, ওঠো! তোমার রবের পক্ষ থেকে রিজিক গ্রহণ করো! অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা আল্লাহ সুবহে সাদেক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মধ্যে রিজিক বণ্টন করে থাকেন। ’ (আত-তারগিব, হাদিস নং : ২৬১৬) সাত-সকালে ওঠা মানুষগুলো সবার থেকে ভিন্ন ও কর্মদক্ষ হয়ে থাকেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন কিংবা রাতে কম ঘুমান, অন্যদের তুলনায় তাদের উপস্থিত বুদ্ধি ভালো হয়।
সকালবেলার সময়টা আল্লাহর কাছে এতই পছন্দনীয় যে, তিনি এ সময়ের শপথ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শপথ প্রভাতকালের, যখন তা আলোকোজ্জ্বল হয়। নিশ্চয় জাহান্নাম ভয়াবহ বিপদগুলোর অন্যতম। ’ (সুরা : মুদ্দাসিসর, আয়াত : ৩৩-৩৫)
অন্য আয়াতে এসেছে, ‘শপথ তাদের, যারা অভিযান বের করে প্রভাতকালে। ’ (সুরা : আদিআত, আয়াত নং : ০৩)
প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সকালবেলায় রিজিকের অন্বেষণ করো। কেননা সকালবেলা বরকতময় ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়। ’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস নং : ৬২২০)