• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন

শেষ লগ্নে জমে উঠেছে কলকাতার পশুর হাট, কদর বেড়েছে দুম্বা ও খাসির

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪

রাত পোহালেই মুসলিম সম্প্রদায় পালন করবে ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদের আগের দিন রোববার (১৬ জুন) শেষ লগ্নে জমে উঠেছে কলকাতার পশুর হাট।

শেষ মুহূর্তে চাহিদা বেড়েছে খাসি ও দুম্বার। তবে বরাবরের মতো গরুর চাহিদা তো রয়েছেই।
সাধারণভাবে চার পেয়ে জন্তু; গরু, মহিষ, উট, দুম্বা, ভেড়া, ছাগল প্রভৃতি পশু কোরবানি করা হয়। আর সেই উপলক্ষে শহর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বসেছে অস্থায়ী পশুর হাট। শহরের তপসিয়া, রাজাবাজার, মানিকতলা খালপাড়, নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস, মেটিয়াবুরুজ প্রভৃতি জায়গায় শেষ বেলায় বেড়েছে বেচাকেনা।

শহরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট বসে দক্ষিণ কলকাতার খিদিরপুরের হেস্টিংসের মাজার সংলগ্ন মাঠে। মূলত সেখানে দুম্বা, ভেড়া ও খাসি প্রধান্য পায়। কিন্তু এখানে মেলে না গরু, উট ও মহিষ। এ বছর এখানে হাট বসেনি।

তবে নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিটে পশুর হাট জমজমাট। জাকারিয় স্ট্রিটেও গরু বিক্রি হয় না। সেখানে ছাগল, দুম্বা ও কিছু পরিমাণে ভেড়া এবারও নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। যেহেতু এবারে ভারতে নির্বাচন চলছিল, এরপর ৪ জুন ছিল নির্বাচনের ফল ঘোষণা। তাই অপেক্ষা করেও উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িষার মতো ভিন রাজ্য থেকে সেভাবে পশু আসতে পারেনি।

এবারে কলকাতার চারিদিকে যেসব অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে, তা শহর সংলগ্ন উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মহাজনরা পশু নিয়ে শহরে এসেছেন। জাকারিয়া স্ট্রিটে শেষ বেলায় খাসি বা ছাগল বিক্রি হচ্ছে জোড়া ৩৫-৪৫ হাজার রুপি। দুম্বা সাইজ এবং মান অনুযায়ী জোড়া ১ লাখ বা তার বেশি।

উত্তর ২৪ পরগনার থেকে এসেছেন কুতুব আলি। তিনি ১০টি ছাগল নিয়ে এসেছিলেন। এরমধ্যে ছয়টি বিক্রি হয়েছে ৯৫ হাজার রুপিতে। বাকিগুলো রোববার রাতের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের গুরুদাস নগর থেকে এসেছেন ওমর ফারুক শেখ। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। অবসরের পর নিজের বাসাতেই দুম্বার ফার্ম তৈরি করেছেন। ফার্মে এবার মোট ২৫০টি দুম্বা পালন করেছেন। তার মধ্যে ১৪৫টি দুম্বা তিনি বাংলাদেশের পশু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন। বাকি দুম্বা জাকারিয়া স্ট্রিটের অস্থায়ী পশুর হাটে এনেছেন। ৯০টি দুম্বা ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। যার প্রতিটির মূল্য ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার রুপি। বাকিগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন।

ওমর ফারুক জানান, গত বছর হেস্টিংসের পশুর হাটে যে দামে পশুগুলো বিক্রি করেছেন, তার থেকে এবার অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আফগানিস্তান ও কাতার থেকে ভারতীয় মুদ্রায় কেজি প্রতি ১১০০ থেকে ১৪০০ রুপিতে পশু কিনে এনে ফার্মে পালন করেছেন তিনি।

অপরদিকে, শহরে এবারে একমাত্র গরুর হাট বসেছে পার্ক সার্কাস লোহাপোলে। সেখানে মান অনুযায়ী ১০ হাজার রুপি থেকে ১ লাখ টাকা দামে গরু বিক্রি হয়েছে। বেশির ভাগ দেশি গরু। কিছু এসেছে ওড়িষা থেকে। গরুর দাম এবারে সবচেয়ে কম হওয়ায় চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পর্যাপ্ত পরিমাণে গরু থাকায় সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী গরু কিনছেন।

পার্ক সার্কাস হাটের পশু কমিটির সম্পাদক সিকান্দার জানান, সবাই যাতে কোরবানি দিতে পারে, সে কারণে পশু মালিকদের দাম কম রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। সবাই তা মেনে নিয়েছেন। তাই গরু বিক্রিতে কারো সমস্যা হয়নি। বেশি পরিমাণে বিক্রি হওয়ায় সবারই পুষিয়ে গেছে। এতে সাধারণরা যেমন সাধ্যের মধ্যে গরু পেয়েছেন তেমন পশু মালিকদের খামারে সব পশু বিক্রি হয়ে গেছে। রোববার আর নতুন করে গরু আসবে না। সব মিলিয়ে হাজার খানেক গরু পড়ে আছে। আজ রাতের মধ্যে সেইসব বিক্রি হয়ে যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ