‘বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলবে’ বিশ্বকাপ শুরুর আগে যদি এমন বলতো কেউ, তাকে পাগল বলতে দ্বিতীয়বার ভাবতেন না হয়তো। যেই দলটা আসর শুরুর আগ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরেছে, তাদের কাছে শেষ চার আকাশকুসুম কল্পনাই বটে।
তবে এখন দৃশ্যপট বদলে গেছে, গল্পে এসেছে ভিন্নতা। সবাইকে অবাক করে বাংলাদেশ উঠে এসেছে সুপার এইটে। খুব দাপুটে হয়তো নয়, তবে সবাইকে চোখ রাঙিয়েই নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয়বার নিশ্চিত করেছে সেরা আট। এবার লক্ষ্য সেমিফাইনাল।
অপেক্ষাটা দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে সুপার এইটে খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর পেরিয়েছে সাতটি আসর। তবে গ্রুপ পর্বের বাধা উৎরানো হয়নি একবারও। অবশেষে আবারো সুপার এইট খেলতে নামছে টাইগাররা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় সুপার এইটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যেখানে টাইগারদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবেন সাকিব-শান্তরা।
টাইগাররা সুপার এইট খেলছে গ্রুপ ১ থেকে। যেখানে অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও তাদের মুখোমুখি হতে হবে আরেক পরাশক্তি ভারত ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আফগানিস্তানের বিপক্ষে। কঠিন হলেও এখন পর্যন্ত যেভাবে খেলে সুপার এইটে এসেছে বাংলাদেশ, সেই ধারা ধরে রাখতে পারলে দারুণ কিছু সম্ভব।
প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে একটুর জন্য হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষ দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারায় টাইগাররা। বিপরীতে অস্ট্রেলিয়া অপরাজিত থেকেই নিশ্চিত করেছে সুপার এইট। বাংলাদেশের বিপক্ষেও নিঃসন্দেহে জয় খুঁজবে তারা।
এদিকে বাংলাদেশও আছে সুপার এইটে প্রথম জয়ের খোঁজে। নিজেদের প্রথম আসরে সেরা আটে এলেও আর কোনো ম্যাচ জেতা হয়নি টাইগারদের। এবার ইতোমধ্যে তিন জয়ে নিজেদের সেরা বিশ্বকাপ কাটনো সাকিব-শান্তরা চাইবেন দলকে সুপার এইটেও জয়ের ধারা ধরে রাখতে।
এন্টিগাতে এর আগেও সুপার এইট খেলেছিল বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টি নয়, সেবার ক্যারিবীয় দ্বিপপুঞ্জে বসেছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের আসর। ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই আসরে খেলা একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব আল হাসান আছেন এবারের আসরেও।
এবারের মতো সেই বিশ্বকাপেও সুপার এইটে বাংলাদেশের প্রথম দুই ম্যাচ ছিল এই অ্যান্টিগায়। কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষও। এবারের মতো সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও সেই ম্যাচটা টাইগাররা হেরে যায় ১০ উইকেটে! এবার নিশ্চয়ই তেমন কিছু চাইবেন না সাকিব।
অবশ্য বাংলাদেশের এন্টিগা স্মৃতি মোটেও ভালো নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচটা ছাড়াও আরো তিনটা ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার দ্বিতীয়টা সেই আসরেই, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেখানেও বাংলাদেশ হারে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
এরপর ২০১৮ ও ২০২১ সালে দুটো টেস্ট খেলে এই মাঠে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দুটোতেই হারে বেশ বড় ব্যবধানে। তবে সেই দুই ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে দিতে পারে এবার। লিটন দাস- নাজমুল হোসেন শান্তরা রাখতে পারেন বড় ভূমিকা।