আর্থিক সচ্ছলতা আর স্বপ্নকে রঙিন করতে ইউরোপের দেশ ইতালি প্রবলভাবে হাতছানি দেয় মাদারীপুরের তরুণদের। জেলার বিশেষ করে রাজৈর, সদর ও শিবচরের অসংখ্য মানুষ বসবাস করছেন ইতালিতে।
গত ১০ বছর ধরে উঠতি বয়সীদের মধ্যে ইতালি যাওয়ার ঝোঁক বেড়েছে প্রবল! আর এই ঝোঁককে পুঁজি করে নিজ এলাকাতেই গড়ে উঠেছে দালালচক্র।
সাগরপথে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের আশার স্বপ্ন দেখায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ডুবে মারা যাচ্ছে অসংখ্য তরুণ।
গত ১৭ জুন রাতে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে সাগরে নৌকা ডুবিতে শিবচরের আলী হাওলাদারের সঙ্গে মারা যান মাদারীপুর সদরের আরও এক তরুণ। সাব্বির আকন (১৮) নামে ওই তরুণের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের মাতম ওঠে। সন্তান হারিয়ে এখন দিশেহারা মা-বাবা ও স্বজনেরা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে নিহতের সংবাদ পৌঁছায় বাড়িতে। নিহত সাব্বির আকন মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের পশ্চিম কালাইমার গ্রামের মামুন আকনের ছেলে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাব্বিরের বাবা ইতালি থাকেন। বছর দুই আগে সাগর পাড়ি দিয়েই সাব্বিরের বাবা মামুন আকন ইতালি পৌঁছান। ভাগ্য তার সহায় থাকলেও আটকে যায় সাব্বির। বাবার কাছে যাওয়ার উদ্দেশেই একই পথে পা বাড়ান তিনি।
জানা গেছে, অভিবাসন প্রত্যাশী বহনকারী দুটি নৌকা সোমবার (১৭ জুন) ইতালির দক্ষিণ উপকূলে ডুবে যায়। এতে ১১ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের পশ্চিম কালাইমার গ্রামের সাব্বির আকন রয়েছেন। একই সঙ্গে শিবচরের খানকান্দি এলাকার আলী হাওলাদার নামে আরেক যুবকও নিহত হয়েছেন।
নিহত সাব্বিরের মা রহিমা বেগম বলেন, ‘ইতালি যাওয়ার পথে সাগরে ট্রলারডুবিতে আমার ছেলে সাব্বিরের মৃত্যু হয়েছে। আমার সংসারের বড় ছেলে ছিল সাব্বির। সবাইকে সুখে রাখতে সে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলে লাশ হয়ে গেল। তাই আমি চাই, সরকার যেন দ্রুত আমার ছেলের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল মামুন বলেন, ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকা ডুবে ইতালির দক্ষিণ উপকূলে মাদারীপুর সদর উপজেলার সাব্বির নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশ আনার ব্যবস্থা করা হবে।