• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

কানে কিছু ঢুকে গেলে

আপডেটঃ : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭

শিশুদের বিশেষ করে ২-৩ বছরের ছেলে মেয়েদের একটা সহজাত প্রবণতা আছে যে, ছোট ছোট কোন জিনিস পত্র নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া। বড়দেরও একটা অভ্যাস আছে কোন কিছু দিয়ে (যেমন, কটনবাড, মুরগীর পালক, ম্যাচের কাঠি দিয়ে) কান খোচানো, চূলকানো। এতে করে খোচানোর সময় কাঠি ভেঙ্গে বা কটন বাডের কটন কানে রয়ে যেতে পারে।
এ সমস্যা সম্পর্কে সবাবইকে কিছুটা ধারণা দেয়ার জন্য আলোকপাত করছি ঃ-
কি কি জিনিস /বস্তু কানে ঢুকতে পারে?
কটন বাড বা তুলার অংশ
ম্যাচের কাঠি, পুতির দানা, বল বিয়ারিং
পেনসিলের শিষ
পাখির/মুরগির পালক
শস্যদানা-চাল, ডাল, ধান, ফলের বীজ, মুড়ি, চিড়া
রাবার, কাগজ, ফোম, ছোট ছোট খেলনার অংশ, আরো কতকি ?
অনেক সময় জীবন্ত পোকামাকড় যেমনঃ মশা, মাছি, আস্ত তেলাপোকা, পিপঁড়া ইত্যাদি কানের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
উপসগর্ সমূহঃ
কানের প্রচন্ড অস্বস্তি হওয়া
কানে ব্যথা
কানে কম শুনতে পাওয়া
জীবন্ত পোকামাকড় কানে ঢুকে গেলে ভীষণ বিরক্তি এমনকি ভয়েরও উদ্রেগ হতে পারে।
চিকিৎসাঃ কানে যে কোন কিছু ঢুকে গেলে উপযুক্ত চিকিৎসা হলো এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের করে ফেলা। অবশ্যই এটার জন্য নাক, কান, গলা, বিভাগ সম্পন্ন হাসপাতাল অথবা ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
কানে জীবন্ত পোকা ঢুকে গেলে আগে অলিভ ওয়েল দিতে হবে যাতে করে এটি মারা যায় তারপর বের করতে হবে। বাসায় অনবিজ্ঞ হাতে অযথা খোঁচাখুঁচি করবেন না বা অদক্ষ কাউকে দিয়ে বের করার চেষ্টা করবেন না। শিশুরা ভয়ে কান্না বা নড়াচড়া করলে এবং অসহযোগীতা দেখালে জোড়পূর্বক বের করার চেষ্টা না করে বরং স¤পূর্ণ অজ্ঞান করে হাসপাতালে বের করাই হবে উত্তম কাজ।
বের না করলে বা অদক্ষ হাতে চেষ্টা করার জটিলতাসমূহঃ
বহিকর্ণে আঘাত লাগা এবং তা থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া
কানের পর্দা ফেটে যাওয়া
মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা ছোট ছোট অস্থিগুলোতে আঘাত লাগা
সর্বোপরি মানব দেহের মূল্যবান পাঁচটি অংগের একটি হল কান -যার শ্রবণ শক্তি কমেও যেতে পারে।
উপসংহারঃ মান সম্পন্ন কোম্পানীর তৈরি খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা লেখা থাকে। আরও লেখা থাকে যে, এ খেলনায় ছোট ছোট পার্টস আছে এবং তা ৩ বছরের নিচের বাচ্চাদের ব্যবহারের জন্য নয়। বয়স্কদের উচিত সচেতন থাকা, অযথা যেকোন কিছু দিয়ে কান না খোঁচানো এবং ছোটদের ছোট ছোট খেলনা দিয়ে খেলতে দিবেন না। এর পরেও কানে কিছু ঢুকে গেলে যতশীঘ্রই সম্ভব নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া এবং উপযুক্ত পরামর্শ গ্রহণ করা।

অধ্যাপক ডাঃ এম আলমগীর চৌধুরী
নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন
বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি বিভাগ
আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
রোড ৮, ধানমন্ডি, ঢাকা, ০১৯১৯ ২২২ ১৮২


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ